মহাসড়কে ওজন স্কেলে ‘হয়রানি’ বন্ধে ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড় দারোগাহাট ওজন স্কেলে হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে ঈদের পর অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2018, 08:21 AM
Updated : 23 May 2018, 08:21 AM

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আন্তঃজিলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কভার্ডভ্যান মালিক সমিতি এবং চট্টগ্রাম ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী মালিক সমিতি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সমিতির আহ্বায়ক মো. নুরুল আবছার বলেন, বড় দারোগারহাটের ওজন স্কেলে ট্রাক এবং কর্ভাড ভ্যানে পণ্য সরকারনির্ধারিত সীমার চেয়ে কম থাকলেও বেশি আছে বলে হয়রানি করা হয়।

“এছাড়া মহাসড়ক ও টার্মিনালে পুলিশ এবং শ্রমিক-মালিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি হচ্ছে। পবিত্র রমজান মাস তাই আমরা পণ্য পরিবহন বন্ধ করতে চাই না। অতিরিক্ত মালামাল আছে বলে পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে ওজন স্কেল থেকে গাড়ি ছাড়া হয়।”

নুরুল আবছার বলেন, কিছুদিন আগেও সেখানে চাঁদার জন্য চালক-সহকারীদের মারধর করা হয়েছে। চলমান সমস্যাগুলো অবিলম্বে সমাধান না হলে ঈদের পর ঢাকা-চট্টগ্রামের সব ধরণের পণ্য পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।

সমিতির সদস্য সচিব দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, মহাসড়কের দাউদকান্দি সেতুর পাশে আরেকটি ওজন স্কেল আছে যেটি সেনাবাহিনী পরিচালনা করে। পণ্যসহ গাড়ির সরকার অনুমোদিত ওজন ২২ টন। দাউদকান্দির ওজন স্কেলে ১০০ বা ২০০ কেজি ওজন বেশি হলেও হয়রানি করা হয় না।

“সেখানে ওজন নির্ধারণও সঠিকভাবে করা হয়। তাহলে একটি স্কেলে যদি সঠিক ওজন আসে অন্য স্কেলে কেন ভিন্ন ওজন আসবে। বড় দারোগারহাটের স্কেলটি তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। যদি নিতান্তই প্রয়োজন হয় সড়ক বিভাগের পরিবর্তে সেনাবাহিনী দিয়ে পরিচালনা করা হোক।”

দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, বড় দারোগারহাটের ওজন স্কেলে একটি গাড়ির পণ্য ওজন করার জন্য ১০ মিনিট সময় লাগে। এতে যাত্রীবাহী বাসের সাধারণ যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা মহাসড়কে আটকা পড়েন।

“এভাবে একটি দেশের মহাসড়ক চলতে পারে না। পরিবহন মালিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।”

নুরুল আবছার বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছাড়া দেশের অন্য কোনো সড়কে ওজন স্কেল নেই। চট্টগ্রামের পরিবহন বিভাগকে এবং চট্টগ্রাম বন্দরকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এই স্কেল বসানো হয়েছে।

“আমাদের আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বিশেষ বা কারো পক্ষে অথবা বিপক্ষে নয়। যদি স্কেলের নামে হয়রানি ও চাঁদাবাজির হাত থেকে ভারী পরিবহন খাতকে রক্ষা করা না হয় তাহলে এর দায়ভার সরকারের পরিবহন সংশ্লিষ্টদের বহন করতে হবে।”

বড় দারোগারহাট ওজন স্কেলে হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন পরিবহন ব্যবসায়ী এবং আমদানি-রপ্তানিকারকরা।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনও ওজন স্কেল স্থগিত চেয়ে সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে চিঠি দেন।

বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সদস্য মো. আজিজুল হক, মনির আহমদ, ফরিদ উদ্দিন, সেলিম রেজা ও সালেহ আহমদ।