মৃত নবজাতক ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ

চট্টগ্রামের বেসরকারি একটি হাসপাতালে জন্ম নেওয়া যমজ নবজাতকের মধ্যে মৃত একটিকে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2018, 02:58 PM
Updated : 22 May 2018, 05:31 PM

মঙ্গলবার নগরীর চকবাজার এলাকার পিপলস হাসপাতালে ওই ঘটনার পর অবশ্য সন্ধ্যায় মৃত নবজাতকটিকে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।  

অপর নবজাতকটিকে বিকালে অন্য একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আমেনা বেগম নামে চান্দগাঁওয়ের এক নারী সকালে পিপলস হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যমজ সন্তানের জন্ম দেন।

আমেনার ননদ খালেদা আক্তার ইশা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভোরে প্রসব বেদনা নিয়ে তার ভাবী পিপলস হাসপাতালে ভর্তি হয়। সাড়ে ছয়টার দিকে চিকিৎসক কুসুম আক্তার ও বিশাখা ঘোষের তত্ত্বাবধানে তার অস্ত্রোপচার হয়।

সে সময় আমেনার শ্বাশুড়ি ও মা আয়েশা বেগম হাসপাতালে ছিলেন। জন্ম নেয়া যমজ শিশু দুইটির মধ্যে ছেলে নবজাতকটি মারা যায়।

আয়েশা বেগম জানান, অস্ত্রোপচারের পর একটি ট্রেতে করে এক আয়া তুলায় মোড়ানো অবস্থায় একটি নবজাতক এনে মৃত বলে জানান।

চিকিৎসক বিশাখা ঘোষ জানান, প্রথম সন্তানটি মৃত প্রসব হওয়ার পর তার স্বজনদের ট্রেতে করে নিয়ে দেখানো হয়। পরে তা অপারেশন থিয়েটারে রেখে দেওয়া হয়।  

ইশা বলেন, “সকাল ১০টার দিকে আমরা ছেলে সন্তানটি চাইলে হাসপাতালে দায়িত্বরতরা নবজাতকটি ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া বলে আমাদেরকে জানান।”

তিনি জানান, আমেনা চিকিৎসক কুসুম আক্তারের চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত শুক্রবার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানো হলে সেখানে দুইটি সন্তানই ভালো আছে বলে জানিয়েছিলেন।

ঘটনার বিষয়ে চিকিৎসক কুসুম আক্তার জানান, আমেনা বেগমের প্রসবের তারিখ ছিল আগামী ৩০ জুন।

“গত শুক্রবার আমেনাকে আমার কাছে নিয়ে আসা হলে দুই সন্তানের একটির অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে পরামর্শ দিয়েছিলাম। তার রক্তপাতও হত। কিন্তু তিনি তা না করে বাসায় চলে যান।

“ভোরে তার প্রসব বেদনা উঠলে আমাকে বাসা থেকে তার স্বজনরা ডেকে আনেন। আমি এসে আমেনার অবস্থা খারাপ দেখে অস্ত্রোপচারের কথা বলি এবং অস্ত্রোপচার করে মৃত সন্তানটি প্রসব করাই।”

মৃত নবজাতকটি গর্ভেই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল জানিয়ে কুসুম আক্তার বলেন, “স্বজনদের মৃত সন্তানটি দেখানোর পর তার ছবি তুলে রাখতে বলি। ওইসময় তাদের কাছে মোবাইল ফোন ছিল না বলে জানান এবং আমেনার শ্বাশুড়ি তা ফেলে দিতে বলেছিল।”

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় গাফিলতির জন্য দায়িত্বরত নার্স ও আয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

পিপলস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র সূত্রধর বলেন, “এখানে কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়েছিল। তারপরও ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়াটি মানবিক হয়নি। ওই সময় দাত্বিরতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”