তাসফিয়ার লাশ উদ্ধারের ১৯ দিনের মাথায় সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার বাবা মোহাম্মদ আমিন এই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সন্দেহ করলেও এবিষয়ে কোনো তথ্য নেই আমিনের কাছে।
সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় তিনি বলেন, “আদনান পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে ডেকে নিয়ে গেছে। তার পেছনে কে আছে, আমরা জানি না।”
গত ২ মে কর্ণফুলী নদী তীর থেকে উদ্ধার করা হয় সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়ার লাশ। পুলিশ তার বন্ধু আদনান মির্জাকে গ্রেপ্তার করে পরদিনই। আদনানও একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ছাত্র।
ফেইসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে মাসখানেক আগে আদনানের সঙ্গে তাসফিয়ার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় বলে পরিবারের ভাষ্য। আদনানের সঙ্গে বেড়াতে বেরিয়েই নিখোঁজ হন তাসফিয়া, পরে লাশ পাওয়া যায়।
আদনান ও তাসফিয়া নগরীর গোলাপাহাড় মোড়ে ‘চায়না গ্রিল’ নামে একটি রেস্তোরাঁয় খাওয়া দাওয়া করেন। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে দুজনে দুটি অটোরিকশায় উঠে চলে যান বলে সিসি ক্যামেরায় ছবি দেখে জানিয়েছে পুলিশ।
তাসফিয়ার বাবা তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “যে রেস্টুরেন্টে তাসফিয়া তার বন্ধু আদনানের সাথে বসেছিল এবং রাস্তায় যে সিএনজি অটোরিকশা করে গিয়েছিল, সেসব এলাকায় আমরা সেই রাতে গিয়েছি। তখন আমাদের সাথে আদনান ও তার সহযোগীরা ছিল।”
সংবাদ সম্মেলনে তাসফিয়ার বাবা বলেন, ‘একটি পক্ষ’ তাদের মামলা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তদন্তের ক্ষেত্রে ভিসেরা প্রতিবেদন যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, এ বিষয়ে প্রশাসনের আন্তরিকতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
পুলিশ বলছে, লাশের ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন এলেই এ ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হবে।
প্রশাসনের সহযোগিতা মিলছে স্বীকার করেই মেয়ের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি চেয়েছেন আমিন।
এই ঘটনায় তাসফিয়ার বাবার করা মামলায় এখন পর্যন্ত আদনান ছাড়া আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এই স্কুলছাত্র এখন রয়েছে কিশোর সংশোধনাগারে।
মামলায় আদনানের কথিত বড়ভাই ফিরোজসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
ফিরোজ আগে ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতা সাজ্জাদ খানের (চাঞ্চল্যকর আট খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত) অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ডাকাতির মামলার আসামি ফিরোজ একবার অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
পরে নিজেকে বর্তমান সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে নগরীতে ব্যানার টাঙান তিনি।