কিছু বলছেন না রাঙামাটির হামলায় আহতরা

রাঙামাটির বেতছড়িতে মাইক্রোবাসে হামলায় পাঁচজন নিহতের ঘটনায় আহতরা ঘটনার বিষয়ে কিছু বলছেন না।

মিঠুন চৌধুরীমিঠুন চৌধুরী চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2018, 01:43 PM
Updated : 5 May 2018, 02:07 PM

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অর্জুন চাকমা ও মিহির চাকমার সঙ্গে শনিবার কথা বলার চেষ্টা করলে তারা কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।

তাদের দেখাশোনা করতে আসা লোকজনও শুক্রবারের ঘটনার বিষয়ে ‘কিছুই জানেন না’ বলে মন্তব্য করেছেন।

আগের দিন গুলিতে নিহত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) নেতা ও নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমাণ চাকমার দাহক্রিয়ায় অংশ নিতে যাওয়ার পথে শুক্রবার বেতছড়িতে ওই হামলার শিকার হন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের নেতাকর্মীরা।

সশস্ত্র এই হামলায় সংগঠনটির অন্যতম শীর্ষ নেতা তপন জ্যোতি চাকমা বর্মাসহ পাঁচজন নিহত হন। মাইক্রোবাসে তাদের চার সঙ্গী আহত হয়ে এখন চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তারা হলেন- অর্জুন চাকমা (২৪), দিগন্ত চাকমা (২৫), আরসিং চাকমা (৩৫) ও মিহির চাকমা (২৮)।

এদের মধ্যে দিগন্ত চাকমার ডান উরুতে গুলি লাগে, শুক্রবারই সেখানে অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

অন্য তিনজন মাইক্রোবাস উল্টে আঘাত পেয়েছেন বলে ধারণা চিকিৎসকদের। এদের মধ্যে মিহিরের হাত, বুকে ও পিঠে আঘাত রয়েছে। আরসিংয়ের আঘাত পিঠ ও মাথায়। আর অর্জুনের আঘাত পিঠে।  

সকালে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে গেলে দেখা যায় আহতদের দেখাশোনা করতে কয়েকজন তরুণ সেখানে আছেন।

ওই তরুণদের কাছে নাম-পরিচয় জানতে চাইলে তারা আহতদের প্রতিবেশী বলে পরিচয় দেন। তাদের দাবি ঘটনার বিষয়ে তারা কিছু জানেন না।

ক্যাজুয়ালটি বিভাগের মাটিতে রাখা একটি বেডে শুয়ে ছিলেন অর্জুন চাকমা।

সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি কিছু বলতে পারব না।”

এটুকু বলেই পাশ ফিরে শুয়ে মুখ পর্যন্ত কম্বল টেনে দেন তিনি। আরেক আহত মিহির চাকমাও কিছু বলতে রাজি হননি।

মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অর্জুন চাকমার আঘাত গুরুতর নয়। তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

“আরসিং ও মিহির চাকমার পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে, তারা ক্যাজুয়ালটিতে আছেন। দিগন্ত চাকমার অপারেশন শেষে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন।”

জেএসএসের (এমএন লারমা) অঙ্গ সংগঠন আদিবাসী শ্রমজীবী কল্যাণ সমিতির চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি রমেল চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছেন তারা। 

হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “নানিয়ারচর উপজেলার চেয়ারম্যানকে বৃহস্পতিবার নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় উনার অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাওয়ার সময় এই পাঁচজনকে হত্যা করা হয়েছে।

“সরকার ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে যারা মানুষ হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমরা। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। আর ইউপিডিএফ (প্রসিত খীসা) নেতৃত্বাধীন সংগঠনকে অচিরেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।”