রনির বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি

কোচিং সেন্টারের এক পরিচালককে মারধরের ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর সংগঠন থেকে অব্যাহতি নেওয়া ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি ষড়যন্ত্রে শিকার বলে দাবি করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী পরিষদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2018, 01:10 PM
Updated : 23 April 2018, 01:53 PM

রনির বিরুদ্ধে করা ‘মিথ্য মামলা’ প্রত্যহারের দাবিতে সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এ দাবি করা হয়। 

রনির বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার, তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত এবং রনিকে স্বপদে পুনর্বহালেরও দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।

সমাবেশে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতাকর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

সাধারণ শিক্ষার্থী পরিষদ, চট্টগ্রাম আয়োজিত সমাবেশের শুরুতে পুলিশ বাধা দিলেও পরে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ হয়। সমাবেশে হাজার খানেক ছাত্র অংশ নিলেও সড়কে যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান মনসুর বলেন, ছাত্র রাজনীতিকে সারাদেশে যিনি নতুন রূপে আর্বিভূত করেছেন সেই রনির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

“এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ও শেখ হাসিনার প্রকৃত কর্মীদের হেয় করা হচ্ছে। আমাদের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা শক্তি রনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।”

হাসান মনসুর বলেন, “বিবেকের তাড়নায় ও ছাত্রলীগের সম্মান রক্ষার্থে সমবেত হয়েছি। কারো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আসিনি। তাই কারো বিরুদ্ধে বিষোদগারও করতে চাই না। কে কী করছে, তা বলতে চাই না।

“ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলে অন্যায় করার অধিকার রনিরও নেই। আইন সবার জন্য সমান। রনি অন্যায় করলে তার বিচারও চাই। কিন্তু রনির ওপর চরম অন্যায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর যোগ্য উত্তরসূরী রনি। সে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। তার কারণে বিজ্ঞান কলেজ-এলিমেন্টারি স্কুলসহ শত শত স্কুল শিক্ষা বাণিজ্য করতে পারেনি।

“চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজে দুই দশকেরও বেশি সময় পর জয় বাংলা শ্লোগান হয়েছিল রনির নেতৃত্বে। সেসময়ে চকবাজার থানার ওসি আজিজ শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। রাশেদ মিয়া সেই আজিজের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির মামলা করেছিল।”

তিনি বলেন, “রনি ভুল করলে তার বিচার হোক। কিন্তু এটা নিয়ে রাজনীতি করার, আওয়ামী লীগের বদনাম করার সুযোগ নেই।”

সমাবেশে অভিভাবক আকতার হোসেন বলেন, “অপকর্ম অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে রনি অভিভাবকদের নরক যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করেছে। শিক্ষা বাণিজ্য বন্ধ করেছে, খেলার মাঠ রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এসবই বোধহয় তার অপরাধ।”

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খোরশেদ আহমেদ জুয়েল বলেন, “শিক্ষা বাণিজ্য রুখে দেওয়ার ডাক দিয়ে রনি কী অন্যায় করেছিল? তাকে থামাতে পারলে শকুনরা জিতে যায়।

স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষ রনিকে খুন করতে চায়। স্বাধীনতার পক্ষের ছাত্রসমাজ যতদিন থাকবে রনির গায়ে কেউ হাত দিতে পারবে না।”

রনিকে ‘ছাত্রবীর’ আখ্যায়িত করে তার বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান সিদ্দিক আহমেদ জুয়েল।

বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে সমাবেশের শুরুতে পুলিশ বাধা দেওয়ার করলেও পরে ছাত্রলীগ নেতাদের অনুরোধে সমাবেশের অনুমতি দেয়।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যান চলাচল যাতে বিঘ্নিত না হয় এবং কোনো ধরনের উসকানি দেওয়া না হয় সেটা ছিল লক্ষ্য। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ হয়েছে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফজলুল কবির সোহেল ও শিবু প্রসাদ চৌধুরী, নগর ছাত্রলীগ নেতা ইয়াছিন আরাফাত কচি, গোলাম ছামদানী জনি, খোরশেদ আলম মানিক, আসরাফ উদ্দিন টিটু, আবদুল হালিম মিঠু প্রমুখ।