চট্টগ্রামে পাহাড়ের অবৈধ বসতি উচ্ছেদে বাধা

বাসিন্দাদের বাধার মুখে চট্টগ্রামে পাহাড়ে অবৈধ বসতি উচ্ছেদে অভিযান শেষ না করেই ফিরে গেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2018, 09:39 AM
Updated : 11 April 2018, 09:39 AM

বুধবার সকাল ১১টায় নগরীর জিলাপির পাহাড়ের পাদদেশে মতি ঝর্ণা এলাকায় অভিযান শুরু হয়।

প্রথমে কয়েকটি ঘর উচ্ছেদ করলেও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান বাধার মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে অভিযান অসমাপ্ত রেখেই তারা ফিরে যায়।

এর আগে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে পাহাড়ে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের উচ্ছেদের বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানানো হয়।

বুধবার সকালের অভিযানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি), সদর সার্কেল আব্দুল্লাহ আল মনসুর নেতৃত্ব দেন।

সঙ্গে ছিল নগর পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম ওয়াসা, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দল।

উচ্ছেদের এক পর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হয়ে অভিযানের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।

এর আগে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নগরীর ২৮টি ঝুকিপুর্ণ পাহাড়ে কয়েক হাজার অবৈধ বসতি স্থাপনাকারী আছে। পর্যায়ক্রমে সব পাহাড় থেকে বসতিস্থাপনাকারীদের উচ্ছেদ করা হবে।

অভিযানের বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মনসুর বলেন, অভিযানের শুরুতে মতিঝর্ণা এলাকার পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে থাকা ১৫টি বসত ঘর অপসারণ করা হয়।

“বেশ কিছু বিদ্যুতের সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর স্থানীয়রা জড়ো হয়ে উচ্ছেদ কার্যক্রমে বাধা দেয়। জড়ো হওয়াদের মধ্যে নারীরা সামনের দিকে ছিলেন। ওই অবস্থায় জোরপূর্বক উচ্ছেদ করতে গেলে তারা আহত হওয়ার আশঙ্কা ছিল।”

আব্দুল্লাহ আল মনসুর বলেন, আমরা পাহাড় থেকে উচ্ছেদ করি মানুষের জীবন বাঁচাতে। কারো জীবনকে শঙ্কায় ফেলতে নয়। তাই অভিযান অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরে এসেছি।

“বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হবে। উনার সাথে আলোচনা করেই পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।”

তিনি বলেন, জিলাপির পাহাড়ের ওই অংশের ভূমির মালিক রেলওয়ে। এছাড়া বাটালি পাহাড়ের কিছু জমির মালিক পিডব্লিউডি। তাদের আমরা আগেই নোটিশ দিয়েছিলাম। এখন আবার বিষয়টি জানাব।

পাহাড়ের ব্যবস্থাপনার কমিটির অনুসন্ধানে চট্টগ্রাম নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রয়েছে ৩১টি।

২০০৭ সালের ১১ জুন নগরীর লেবু বাগান, আমবাগান, কুসুমবাগ ও টাংকির পাহাড় এলাকায় পাহাড় ধ্বসে ১২৭ জন নিহত হয়।

এরপর থেকে প্রায় প্রতি বছরই নগরীতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বর্ষা মৌসুম আসার আগে প্রতিবার নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন।