কোটা সংস্কার: ১০ ঘণ্টা পর সরলেন আন্দোলনকারীরা

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রায় ১০ ঘণ্টা অবস্থানের পর ষোলশহর রেল স্টেশন থেকে সরে গেছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2018, 02:30 PM
Updated : 9 April 2018, 02:30 PM

ঢাকায় সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে কোটা সংস্কারের আশ্বাসের খবর চট্টগ্রামে আসার পর সন্ধ্যা সাতটার দিকে স্টেশন থেকে সরে যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ চট্টগ্রামের আহ্বায়ক তোফায়েল আহমেদ রিয়াদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মতো চট্টগ্রামেও কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

“পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ী কর্মসূচি পালন করা হবে।”

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও আন্দোলন নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে নগরীর ষোলশহর রেল স্টেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন আটকে দেন বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে সকাল সাড়ে ৭টা ও সাড়ে ৮টায় নগরীর বটতলী স্টেশন থেকে দুটি শাটল ট্রেন ছেড়ে গেলেও তাতে অন্য দিনের তুলনায় শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল কম।

ষোলশহর রেল স্টেশনে সকালের দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন তাদের সাথে।

সন্ধ্যা পর্যন্ত ষোলশহর রেল স্টেশনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলেও সেখানে পুলিশ সদস্যদের সাথে তাদের কোনো বিরোধ হয়নি।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়, নাজিরহাট, শহরগামী শাটল ও ডেমু ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

অবরোধ চলাকালীন বেলা ১২টা ও পৌনে একটার দিকে নাজিরহাটগামী একটি ডেমু ট্রেন ও হাটহাজারী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ফার্নেস অয়েল নিয়ে একটি ওয়াগন চলাচল করতে দিলেও অন্য কোনো ট্রেন চলতে দেননি বিক্ষোভকারীরা।

ষোলশহর রেল স্টেশন মাস্টার মো. শাহাবউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সকালে দুইটি শাটল ট্রেন ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে গেলেও সাড়ে ১০টা, তিনটার শাটল ট্রেন ও বেলা দেড়টার বিশ্ববিদ্যালয়গামী ডেমু ট্রেন যেতে পারেনি।

এছাড়াও নাজিরহাট থেকে শহরগামী একটি ডেমু ট্রেন সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে অবস্থান করছিল বলে জানান তিনি।

আন্দোলনকারীদের প্রধান সমন্বয়কারী মো. আরজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনে বাধ্য হব।”

এদিকে চবি ক্যাম্পাসে সকাল থেকেই চলে ক্লাস বর্জন।বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাস থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হন।

সেখানে শুরুতে মানববন্ধন করলেও পরে মিছিল নিয়ে তারা ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত যান।

জিরো পয়েন্টে পুলিশ তাদের আটকে দিলে আন্দোলনকারীরা আবারও মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফিরে যান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের পূর্ব নির্ধারিত একটি পরীক্ষা ‘শিক্ষার্থী স্বল্পতার’ কারণে হয়নি বলে জানিয়েছেন সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র।

এদিকে দুপুরে ক্যাম্পাস থেকে শহরগামী কোন শাটল ট্রেন শহরে না আসায় অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস থেকে সড়ক পথে এসে বিকালে ষোলশহর স্টেশনে বিক্ষোভে যোগ দেন।