চট্টগ্রাম বন্দরে ‘পেশাদারি মনোভাবের ঘাটতি’

চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নে পেশাদারি মনোভাবের অভাব রয়েছে এবং তা থেকে উত্তরণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন একটি গোলটেবিল বৈঠক থেকে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2018, 08:37 PM
Updated : 24 March 2018, 08:51 PM

শনিবার চট্টগ্রাম ক্লাবে ‘সংকটে চট্টগ্রাম বন্দর, উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।

তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বছরে আট কোটি টন পণ্য পরিবহন হচ্ছে। আগামী পাঁচ-সাত বছরে তা দ্বিগুণ হবে। এজন্য বিদ্যমান সমস্যাগুলো এখনই সমাধান করতে হবে।”

আলাচকের বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “বন্দর নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে পেশাদারি মনোভাব এবং রাজনৈতিক মনোযোগের অভাব রয়েছে। নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের চার বছর হলেও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সেটি পরিচালনা করা যাচ্ছে না।”

রাজনৈতিক অমনোযোগের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।”

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “বর্তমান সরকার সড়ক, সেতু, বিদ্যুৎ ও রেলের অবকাঠামো খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করলেও বন্দর নিয়ে সেভাবে হয়নি। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ৯২ শতাংশ পরিবহন হয়, সেখানের সমস্যা রেখে বিকল্প বন্দর দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করে সুফল আসবে না।”

সরকারের বিনিয়োগের খাত সুষম হওয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার বন্দরের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তাতে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।

সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য মো. জাফর আলম বলেন, “সীমাবদ্ধতা থাকলেও চট্টগ্রাম বন্দর এখন সঠিক পথেই আছে। পতেঙ্গা, লালদিয়া এবং বে টার্মিনাল নির্মাণ হচ্ছে। মাতারবাড়িতেও বন্দর নির্মাণের খুব সম্ভাবনা আছে।

“বন্দরে কন্টেইনার পরিবহনে যে প্রবৃদ্ধি রয়েছে তা অব্যাহত থাকলে আগামী তিন-চার-পাঁচ বছর সংস্কার করে তা সামাল দেওয়া যাবে।এর মধ্যে নতুন টার্মিনাল যুক্ত হলে সংকট থাকবে না।”

বৈঠকে বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রগতি হল দেশের রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির অগ্রগতি। এজন্য রাজনৈতিকভাবে ভাবতে হবে। আঞ্চলিক নেতাদের এই জায়গায় কথা বলতে হবে।”

সাংবাদিক মামুন আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিলে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিপার্স কাউন্সিলের সভাপতি মো. রেজাউল করিম। বৈঠকে বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ব্যবসায়ী আবুল বশর চৌধুরী, চট্টগ্রাম কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার নাহিদা ফরিদী, বিজিএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, বাফার পরিচালক খায়রুল আলম সুজন, শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।