ভারতীয় ছাত্র খুন: স্বদেশী উইনসন ‘কিছুই জানে না’

চট্টগ্রামে ভারতীয় শিক্ষার্থী খুনের ঘটনায় তার স্বদেশী শিক্ষার্থী উইনসন সিংকে চতুর্থ দফায় রিমান্ডে নিয়েও খুনের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2018, 03:23 PM
Updated : 22 March 2018, 03:23 PM

বৃহস্পতিবার উইনসন সিংয়ের দুই দিনের হেফাজত শেষ হয়।

গত রোববার পিবিআইয়ের আবেদনে চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমান হেফাজত মঞ্জুর করেছিলেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উইনসনকে জিজ্ঞাসবাদ করলেও আমরা তার সহপাঠী আতিফ শেখের খুনের কারণ সম্পর্কে জানতে পারিনি।

“রিমান্ড শেষে উইনসনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। নতুন করে তার রিমান্ড চাওয়া হয়নি। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”

এক প্রশ্নে সন্তোষ বলেন, “ছুরির বাটে তার হাতের ছাপ কিভাবে এলো সেটা উইনসনের কাছে জিজ্ঞাসবাদের সময় জানতে চেয়েছিলাম। জবাব দিয়েছে- সেটা সে বুঝতে পারছে না।

“ওই রাতে কী ঘটেছিল জানতে চাইলে বারবার বলছে তার সেসময়ের কথা কিছুই মনে নেই। উল্টো সে জানতে চায়- একই প্রশ্ন কেন তাকে বারবার করা হচ্ছে।” 

মানসিকভাবে উইনসন সম্পূর্ণ সুস্থ আছে এবং সে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যকাণ্ডের ঘটনা এড়িয়ে যাচ্ছে বলে মেডিকেল বোর্ড আগেই প্রতিবেদন দিয়েছে।

সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, “মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনের বিষয়ে উল্লেখ করে ঘটনার সময়ের বিবরণ জানতে চাইলে উইনসন দাবি করছে- ডাক্তাররা তার বিষয়ে ভুল প্রতিবেদন দিয়েছে।”

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসির এমবিবিএস পড়ুয়া দুই ভারতীয় শিক্ষার্থী আতিফ শেখ ও উইলসন সিংকে গত বছরের ১৪ জুলাই গভীর রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।

তারা নগরীর আকবর শাহ থানার আব্দুল হামিদ সড়কের ছয় তলা একটি ভবনের পঞ্চম তলায় থাকতেন।

এদের মধ্যে আতিফ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন, আর উইলসন ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে ঘটনার পর সহপাঠীর বরাত দিয়ে জানায় পুলিশ।

পিবিআই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসাধীন উইনসনকে হত্যা মামলা গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুই দফা রিমান্ডে নিয়েছিল। তারপরও কিছু জানতে না পেরে মানসিক পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করে।

আদালতের নির্দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ড উইনসন মানসিকভাবে সুস্থ এবং ইচ্ছাকৃতভাব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এড়িয়ে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদন দেয়। এরপর তৃতীয় দফায় তাকে রিমান্ডে নেয় পিবিআই। তখনও তার কাছ থেকে কোনো তথ্য মেলেনি।

হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা রক্ত, কাপড় ও ছুরিসহ পাঁচটি আলমতের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় সিআইডি ল্যাবে পাঠিয়েছিল। সেখানে চারটি আলামতের ডিএনএ এক হলেও একটি ভিন্ন ডিএনএ পাওয়া যায়।

আলামতে পাওয়া ভিন্ন ডিএনএ পরীক্ষার জন্য কারাগারে আটক সন্দেহভাজন দুই স্বদেশী শিক্ষার্থী উইনসন সিং ও নিরাজ গুরুর ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়।

ডিএনএ প্রতিবেদনে ভাঙ্গা ছুরির বাটে পাওয়া ডিএনএর সাথে উইনসন সিংয়ের ডিএনএ মিল পাওয়া যাওয়ার কথা জানায় পিবিআই।

এরপর গত ১৩ মার্চ চতুর্থ দফায় রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পিবিআই।