ছিঁচকে চোর কারাগার থেকে বেরিয়ে পেশাদার ছিনতাইকারী

এক সময় ছিঁচকে চুরিতে হাত পাকালেও এখন নিয়মিত ছিনতাই করেন। কারাগারে পরিচয় হওয়া দুই পেশাদার ছিনতাইকারীর সঙ্গে সখ্যতায় তাদের হাত ধরেই পেশাবদল খাইরুল ইসলামের।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2018, 12:04 PM
Updated : 21 March 2018, 12:04 PM

বুধবার রাতে চট্টগ্রামে মোটর সাইকেল ছিনতাই করে পালানোর সময় গ্রেপ্তার খাইরুলের ছিঁচকে চোর থেকে পেশাদার ছিনতাইকারী হয়ে ওঠার এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

রাঙামাটির লংঘদুর বাসিন্দা খাইরুলের বসবাস নগরীর কলসী দিঘীর পাড়ের ফারুকের কলোনিতে।

তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী, বায়েজিদ বোস্তামী, ডবলমুরিং ও বন্দর থানায় চুরি, ছিনতাইসহ মোট আটটি মামলা রয়েছে।  

নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মঙ্গলবার রাতে বেসরকারি একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দুই শিক্ষার্থী রিকশা নিয়ে দেওয়ানহাটের দিকে যাচ্ছিলেন।

“ইস্পাহানি মোড়ে মোটর সাইকেলে আসা ছিনতাইকারীরা পেছন থেকে ওই শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপের ব্যাগ ধরে টান দিলে একজন রিকশা থেকে পড়ে যান।

কামরুজ্জামান বলেন, “সে সময় ওই রাস্তা দিয়ে মোটর সাইকেলে করে যাচ্ছিলেন গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আব্দুর রব। তিনি বিষয়টি দেখতে পেয়ে ছিনতাইকারীদের মোটর সাইকেলটিকে ধাওয়া করেন।

“ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে গিয়ে মোটর সাইকেল ফেলে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সহায়তায় ছিনিয়ে নেওয়া ল্যাপটপসহ খাইরুলকে ধরে ফেলা হয়, আরেকজন পালিয়ে যায়।”

জিজ্ঞাসাবাদে খাইরুল অস্ত্র নিয়ে ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছেন বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি।

গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মহসিন জানান, জিজ্ঞাসাবাদের পর ভোর রাতে খাইরুলকে নিয়ে কলসী দিঘী এলাকায় তার বাসা তল্লাশি করে দেশি একটি এলজি ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, “খাইরুল ছিল আগে ছিঁচকে চোর। বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় বিভিন্ন লোহার কারখানা ও বাসা বাড়িতে চুরি করত।”

আগেও বিভিন্ন সময়ে খাইরুল গ্রেপ্তার হয়েছিলেন জানিয়ে মহসিন বলেন, “কারাগারে থাকা অবস্থায় তার সাথে তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারী হামকা নুর আলম ও হাতকাটা জাহাঙ্গীরের পরিচয় হয়। কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে তাদের হাত ধরে সেও পেশাদার ছিনতাইকারী হয়ে উঠে।”

গোয়েন্দা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, ২০০২/২০০৩ সালের দিকে মূলত খাইরুল অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন। ২০১০ সালে কারাগার থেকে বের হয়ে ছিনতাই শুরু করেন। হামকা নুর আলম ও হাতকাটা জহাঙ্গীর কারাগারে থাকায় খাইরুল নিজেই একটি গ্রুপ তৈরি করে ছিনতাই করে আসছে।

খাইরুল ছিনতাইয়ের সময় দুইটি সিএনজি অটো রিকশা ও দুইটি মোটর সাইকেল ব্যবহার করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা রেয়াজউদ্দিন বাজার, জিইসি ও মুরাদপুর এলাকায় অফিস চলাকালীন সময়ে অবস্থান নেয়।

“তাদের টার্গেট করা ব্যক্তি টাকা নিয়ে বের হওয়ার পর টান দিয়ে টাকার ব্যাগ নিয়ে যায়, কখনো কখনো কৌশলে বা জোর করে অটোরিকশায় তুলে অস্ত্র দেখিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেয়।”