শিক্ষার্থীদের বাড়তি বেতন নিয়ে অভিভাবকদের ক্ষোভ

শিক্ষার্থী বেতন বাড়ানোর প্রতিবাদে চট্টগ্রামে একটি স্কুলে বিক্ষোভ করেছেন অভিভাবকরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2018, 11:14 AM
Updated : 12 March 2018, 11:14 AM

সোমবার দুপুরে নগরীর এমএম আলী রোডে বাংলাদেশ এলিমেন্টারি স্কুলের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।

অভিভাবকদের অভিযোগ- স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনা ছাড়াই প্রতি ক্লাসে বেতন ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে।   

তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা বেতন বাড়িয়েছেন, যা এ মাস থেকে কার্যকর হয়েছে।  

দুপুরে স্কুল গেইটে মাইক লাগিয়ে সমাবেশ করেন অভিভাবকরা।

স্কুলটিতে প্লেগ্রুপ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত দুই হাজার ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি টাকা আদায়ের অভিযোগে গত বছর এটিসহ চট্টগ্রামের ছয়টি স্কুলের স্বীকৃতি বাতিল করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে উচ্চ আদালতে আপিল করে সিদ্ধান্ত স্থগিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।

অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক হাসান মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বছরের শুরুতে বেতন বাড়ানোর কোনো নির্দেশনা বা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া না হলেও রোববার শিক্ষার্থীরা বেতন দিতে এসে বাড়তি টাকার বিষয়টি জানতে পারে।

তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে তার ছেলের বেতন তিন হাজার ১০০ টাকা থাকলেও এ মাস থেকে তাকে অতিরিক্ত আরও ৮০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। 

এজন্য অনেক শিক্ষার্থী বেতন দিতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী বেতন ফি বাড়ানোর জন্য অভিভাবকদের সঙ্গে পরামর্শ করে করতে হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি আগে থেকে কোনো অভিভাবককে না জানিয়ে নিজেদের মতো করে বেতন বাড়িয়ে দিয়েছে।”

শামীমা আক্তার নামের এক অভিভাবক জানান, তার নার্সারি পড়ুয়া ছেলের বেতন দুই হাজার ৬০০ টাকা থাকলেও তা এ মাস থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার ২০০ টাকা করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে কথা বলতে না চাইলেও পরে সহকারী প্রধান শিক্ষক অজিত কুমার আইচ কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আয়-ব্যয় সমন্বয় করে স্কুল কর্তৃপক্ষ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত তাদের বেতন বাড়াতে পারে। সে প্রেক্ষিতে আমরা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেছিলাম।

“আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন যাচাই-বাছাই করে বর্ধিত বেতন ঠিক করেছে।”

অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া শিক্ষার্থীদের বেতন বাড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

“অভিভাবকদের নিয়ে আমরা শ্রেণিকক্ষে বসে তাদের সন্তানদের পড়ালেখার উন্নতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলাম। ওই বৈঠকে বেতন বাড়ানোর কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

“যারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না তারাই বর্ধিত বেতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।”

অজিত আইচ বলেন, “বেশি ভর্তি ফি আদায়ের অভিযোগ গত বছর আমাদের কার্যক্রম বন্ধ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকার নির্ধারিত তিন হাজার টাকার বাইরে অতিরিক্ত যে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছিল তা শিক্ষার্থীদের বেতনের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।”

এ কারণে শিক্ষাবোর্ড তাদের আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে দাবি এ শিক্ষকের।

তবে অভিভাকদের অভিযোগ, গত বছর অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করা হলেও এ বছর হয়নি। তাই সে ঘাটতি পুষিয়ে নিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ নতুন বছরের তিন মাসের মাথায় বেতন বাড়ানো সিদ্ধান্ত নিয়েছে।