স্কুলছাত্রকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, ৪ কিশোর গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে এক স্কুলছাত্রকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে চার কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2018, 11:57 AM
Updated : 11 March 2018, 12:17 PM

গ্রেপ্তাররাও নগরীর বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী।

রোববার ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আইস ফ্যাক্টরি রোড ও মাদারবাড়ি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মুক্তাদির রহমান, শাকিল, এ আল কিবরিয়া ও শাহিদ আজ-মাঈন। তাদের সবার বয়স ১৮ বছরের মধ্যে।

এদের মধ্যে মুক্তাদির সেন্ট্রাল পাবিলক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবছর দ্বিতীয়বার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। শাকিল নগরীর ইসলামীয়া ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষ, কিবরিয়া সরকারি সিটি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষ ও শাহিদ রেলওয়ে বহুমুখী স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র।

সদরঘাট থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মেহেদী হাসান মিসকাত নামে সেন্ট্রাল পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ‘ডে কেয়ার শাখার’ সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে অপহরণ করে মারধর এবং পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল গ্রেপ্তাররা।

এই ঘটনায় মেহেদীর পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে ভোর রাতে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তিনজনকে এবং পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মাঈনকে দুপুরে মাদারবাড়ি এলাকার তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মেহেদীর বাবা আব্দুল জলিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ডে কেয়ার স্কুলে মেহেদীর ক্লাস চলত রাত ৮টা পর্যন্ত। রাতে স্কুল থেকে বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় তারা খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন।  

রাত পৌনে ১১ টার দিকে মেহেদী আহত অবস্থায় বাসায় ফিরে যায় জানিয়ে তিনি বলেন, “মেহেদীর শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোলা রয়েছে। এসময় সে তাকে ‘অপহরণ’ করে মারধর করার কথা জানায়। মেহেদীর গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টারও দাগ আছে।

“‘অপহরণকারীরা’ তার মার মোবাইলে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং টাকা না দিলে মেহেদীকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।”  

টাকার জন্য বেশ কয়েকবার ফোন করার পর তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান।

ওসি নেজাম উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়ে গভীর রাতে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে পুলিশ টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখায় অপহরণকারীদের। ভোর রাতে তারা টাকা নিতে নার্সারি এলাকায় গেলে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, “গ্রেপ্তাররা জানিয়েছে, মুক্তাদিরের পরিকল্পনা অনুযায়ী টাকা আদায়ের জন্য তারা মেহেদীকে অপহরণ করে তারা। নার্সারির পেছনে নিয়ে তোয়ালে দিয়ে মেহেদীর গলায় ফাঁস দেওয়া হয় এবং তাকে মারধর করা হয়। জ্ঞান হারিয়ে মুখে ফেনা চলে আসায় মেহেদীকে মৃত ভেবে তারা পালিয়ে যায়।

“অপহরণকারীদের ধারণা ছিল মেহেদী মারা গেছে এবং পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তারা পালিয়ে যাবে।”

ওসি নেজাম জানান, গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নার্সারি এলাকা থেকে মেহেদীকে বাঁধার জন্য ব্যবহার করা প্লাস্টিকের রশি, তোয়ালে, তার স্কুল ব্যাগ ও প্যান্ট উদ্ধার করা হয়েছে।  

ওসি বলেন, মেহেদীর পরিবারকে ফোন করার জন্য গ্রেপ্তাররা যে মোবাইল সিম ব্যবহার করেছিল সেটি তারা স্টেশন রোড থেকে কিনেছিল বলে জানিয়েছে।

মেহেদী নগরীর মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন তার বাবা।