কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে শিগগিরই অভিযান: জেলা প্রশাসক

কর্ণফুলী নদীর দুই তীরের দুই হাজার ২১২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দ্রুত কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রামের নতুন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2018, 12:52 PM
Updated : 10 March 2018, 12:52 PM

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলার সার্বিক উন্নয়ন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ আশ্বাস দেন।

সভায় সাংবাদিকরা কর্ণফুলী নদীর দখলের চিত্র তুলে ধরে অবিলম্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানান।

জবাবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, “অতীতে এখানে দায়িত্ব পালনকালে (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে) কর্ণফুলীর দুই তীরে দুই হাজার ২১২টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করেছিলাম।

“কিছু সরকারি ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বাদে বাকিগুলো উচ্ছেদের অনুমতি দিয়েছেন হাই কোর্ট। আমি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করব। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উচ্ছেদের ব্যবস্থা করব।”

জাতীয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্ণফুলী নদীর মোহনাতেই অবস্থিত চট্টগ্রাম বন্দর। এই নদীর দুই পাড়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে টানেল নির্মাণের প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে।

২০১০ সালের ১৮ জুলাই হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলী নদী দখল, মাটি ভরাট ও নদীতে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেয়।

সেইসঙ্গে আদালত স্থানীয় প্রশাসনকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে বলে।

আদালতের নির্দেশের পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর কর্ণফুলীর দুই তীরে সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করে।

নগরীর নেভাল অ্যাকাডেমি সংলগ্ন নদীর মোহনা থেকে মোহরা এলাকা পর্যন্ত অংশে ২০১৫ সালে জরিপের কাজ শেষ করে প্রশাসন।

সেই জরিপে নদীর দুই তীরে প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন। প্রতিবেদনটি ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর উচ্চ আদালতে দাখিল করা হয়।

এরপর ২০১৬ সালের ১৬ অগাস্ট হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলীর দুই তীরে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরাতে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয়।

সবশেষ ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন চট্টগ্রামের সেসময়ের জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী।

তবে এখনো উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়নি। অর্থের অভাবে উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না বলে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

শনিবারের সভায় নগরীর পাহাড় থেকে অবৈধ বসতি উচ্ছেদ, হালদা নদী রক্ষা, মাদক নির্মূল, কিন্ডারগার্টেনে মনিটরিং জারি রাখা, চাক্তাই খাল পুনরুদ্ধার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

সভায় আতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাবিবুর রহমান, উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাশহুদুল কবীর, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. রুহুল আমীন উপস্থিত ছিলেন।