চবি প্রক্টর কার্যালয় ভাংচুর: ২৪ ঘণ্টাও কোনো ব্যবস্থা নেই

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর কার্যালয়, পরিবহন ভাংচুর ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ২৪ ঘণ্টা পরও ঘটনার জন্য দায়ী ছাত্রলীগকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2018, 12:52 PM
Updated : 21 Feb 2018, 02:55 PM

ছাত্রলীগের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি জানিয়ে উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আলোচনা হয়েছে। তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে।”

অবরোধকারীদের নেতা চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মনসুর আলমের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করা ও আটক কর্মীদের মুক্তির বিষয়টি প্রশাসন মেনে নেওয়ায় অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে দাবি করেন।

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সোমবার দুপুরে ক্যাম্পাসে সংঘর্ষে জড়ায় নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী চবি ছাত্রলীগের দুইপক্ষ।

রাতে শাহ আমানত ও শাহ জালাল হলে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে বেশকিছু দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র ও দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার এবং বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।

এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্পাসগামী শাটল ট্রেন আটকে দিয়ে দুপুরে গেইট বন্ধ করে অবরোধ শুরু করে আ জ ম নাছিরের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

এই সময় পুলিশ তাদের পিটুনি দিয়ে ছত্রভঙ্গ করার পর প্রক্টর কার্যালয়ে ও পরিবহন দপ্তরে গিয়ে বেশকিছু যানবাহন ভাঙচুর করে অবরোধকারীরা।

এরপর বেসরকারি দুটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাথে কথা বলার সময় প্রক্টর কার্যালয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগ নেতা মনসুর বলেন, “আমাদের তিন দফা দাবির মধ্যে আটক কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির বিষয়টি প্রশাসন মেনে নিয়ে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আমাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা না করার যে দাবি ছিল সেটি মেনে নিয়ে কোনো মামলা করেনি চবি প্রশাসন।

তিনটি দাবির মধ্যে দুটি দাবি প্রশাসন মেনে নিয়ে প্রক্টরের পদত্যাগের বিষয়টি উপাচার্য বিচেনায় রেখেছেন বলে দাবি তার।

তবে উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘প্রক্টরের পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না।’

ভাংচুরের ঘটনায় মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়মে যা আছে তাই হবে।

এদিকে তাদের কর্মীদের ওপর লাঠিপেটার বিষয়টি ‘অন্যায়’ হয়েছে বলে উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে ছাত্রলীগকে ‘দেখভাল’ করার আশ্বাসও দিয়েছেন বলেও দাবি ছাত্রলীগ নেতা মনসুর আলমের।

এ বিষয়ে উপাচার্য ইফতেখার বলেন, ছাত্রলীগের ন্যায্য কিছু বলার থাকলে, তা সামাধান করা হবে। 

চবি ছাত্রলীগের নাছির অনুসারীদের নেতৃত্বে আছেন বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু ও আবুল মনসুর।

টিপু সিআরবি টেন্ডার সন্ত্রাসে জোড়া খুন ও নিজ দলের নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর হত্যা মামলার অন্যতম আসামি।

এর আগে গত বছরের ৭ নভেম্বর উপাচার্যের কার্যালয়েও ভাংচুরের জড়িত ছিল টিপু মনসুরের নেতৃত্বাধীন নাছির অনুসারীরা।  

ওই সময় টিপু ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তাদের কোন নেতাকর্মীর নামে মামলা হলে ক্যাম্পাস অচলের হুমকি দিয়েছিলেন।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অজ্ঞাতনামা আসামি করে হাটহাজারি থানায় মামলা করেন।