তারা বলছেন, ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী এই কিশোর-তরুণরা ‘ছিনতাইয়ে জড়িত’, কাছে পিস্তল থাকায় ধরা পড়ার ভয়ে চেকপোস্টে তল্লাশির আগেই তারা গুলি চালায়।
শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ২ নম্বর গেইট এলাকায় ব্যস্ততম সড়কের পাশেই পুলিশের ওপর হামলার এই ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ পাঁচলাইশ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আব্দুল মালেককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাঁটুর উপরে গুলিবিদ্ধ মালেক এখন আশঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীদের ব্যবহৃত দুটি মটরসাইকেল এবং মো. হাকিম (১৯) এক তরুণকে আটক করা হয়েছে বলে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আবদুল ওয়ারিশ জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাদক ও অস্ত্রবিরোধী বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে পুলিশের একটি দল সেখানে ‘সাদা পোশাকে’ তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করছিল। তাদের সহায়তার জন্য একটি মোবাইল টিমও ছিল।
“তল্লাশি চৌকিতে থামতে বলার পরপরই তারা গুলি করে। তারা তিন রাউন্ড এবং পুলিশ দুই রাউন্ড গুলি করেছে। তবে পুলিশের গুলি হামলাকারীদের কারও লাগেনি।”
ঘটনার বিবরণে পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “দুটো মটরসাইকেলের মধ্যে একটিতে নম্বর প্লেটের স্থানে টেপ দিয়ে খবরের কাগজ লাগানো ছিল। তা দেখে সন্দেহ হওয়ায় তল্লাশি চৌকিতে তাদের থামানো হয়। দুই মটরসাইকেলে চারজন ছিল।
“এ সময় পেছনের মটরসাইকেল থেকে অতর্কিতে একটি গুলি করা হয়। তখন অভিযান দলের সদস্যরা হামলাকারীদের দুজনকে ধরে ফেলে। পরে আরও গুলি করায় একজন ছুটে পালিয়ে যায়।”
পুলিশের ওই দলে থাকা এসআই নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা পাঁচজন ছিলাম। সিগন্যাল দিয়ে মটরসাইকেল দুটিকে থামতে বলার পরই তারা গুলি শুরু করে। আমরাও পাল্টা গুলি করি।”
তবে ঘটনা সম্পর্কে ভিন্ন বিবরণ দিয়েছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মটরসাইকেল দুটি পুলিশ আসার আগেই সেখানে ছিল। মটরসাইকেল দুটি ঘিরে ১০-১৫ জন কম বয়সী ছেলে দাঁড়িয়ে ছিল।
“পুলিশের একজন সাদা পোশাকে এসে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেদের সাথে কথা বলা শুরু করার অল্প কিছুক্ষণ পরই তারা একটি পিস্তল থেকে ফাঁকা গুলি করে। এরপর ওই ছেলেরা আরও দুটি গুলি করে, যার একটি ওই পুলিশ সদস্যের পায়ে লাগে। এ সময় অন্য পুলিশ সদস্যরা ছুটে এসে কয়েকজন ছেলেকে জাপটে ধরে।
“কিন্তু গুলিবিদ্ধ পুলিশ সদস্যকে পড়ে যেতে দেখে তারা ওই ছেলেগুলোকে ছেড়ে দেয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি করলেও তা লাগেনি।”
এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে জানিয়ে ওসি মহিউদ্দিন বলেন, “উঠতি বয়সী একটি গ্রুপ অতীতে ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত ছিল, তারাই এ ঘটনায় জড়িত।”
“এখন পর্যন্ত হামলাকারীদের কাছে একটি পিস্তল থাকার তথ্য আমরা পেয়েছি। জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার ও পিস্তলটি উদ্ধারে কয়েকটি দল অভিযান চালাচ্ছে।”
আহত আব্দুল মালেকের শরীর থেকে ‘বেশ রক্তক্ষরণ’ হওয়ায় তাকে রক্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল ওয়ারিশ।
তিনি বলেন, “চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। তবে গুলিটি বের করার জন্য অপারেশন করা হবে।”