তিনি বলেছেন, মহিউদ্দিন চৌধুরীর ওপর দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই আস্থা রাখতেন।
বুধবার বিকালে নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্মরণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমু বলেন, “মহিউদ্দিন চৌধুরীর নাম ঢাকার প্রত্যেক নেতা স্মরণ করেন। একটিই কারণ। আন্দোলন-সংগ্রামে নেত্রীর আস্থা ছিল মহিউদ্দিন। সাংগঠনিক যেকোনো কাজে নেত্রী বলতেন- মহিউদ্দিনকে বল।
“জাতীয় রাজনীতির বাইরেও তার একটা আলাদা জায়গা ছিল- চট্টগ্রামের স্বার্থ। আমি তাকে বলতাম ‘তুমি একদিকে জাতীয় রাজনীতির কথা বলছ, আবার চট্টগ্রামের স্বার্থে অবিচল। তুমি তো মনে হয় সুযোগ পেলে চট্টগ্রামের স্বাধীনতা ঘোষণা দিবে।”
আমু বলেন, “সে (মহিউদ্দিন) হেসে বলত- প্রয়োজনে হতেও পারে। আমরা যে অর্থের যোগান দিই, যে ট্যাক্স দিই, সে ট্যাক্সে সারাদেশ পরিচালিত হয়। তাহলে আমরা কেন বঞ্চিত হব?
“মহিউদ্দিন চৌধুরীকে যারা ভুল বুঝেছিল নিশ্চয় তার তিরোধানের পর তাদের ভুল ভেঙ্গেছে। তিনি ছিলেন এই চট্টগ্রামের একক নেতা, চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের নেতা।”
আমু বলেন, “তিনি দিয়েছেন ভালোবাসা ও সমর্থন। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি শুধু রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না, সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রে ছিল তার বিচরণ। এর মধ্য দিয়ে মানুষের সাথে তার আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
“তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছিল তার মুখ খারাপ। কখন একটি মানুষকে গালমন্দ করতে পারে যখন সেই মানুষকে সে অত্যন্ত আপন মনে করে। মহিউদ্দিন চৌধুরী এই এলাকার মানুষকে অত্যন্ত আপন করে গ্রহণ করেছিলেন।”
স্মরণ সভায় আমুর বক্তব্যের আগে বক্তব্য রাখেন মহিউদ্দিনপুত্র এবং আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
পরে বক্তব্যে আমু বলেন, “আমি আজ মহিউদ্দিনের সন্তান নওফেলের বক্তব্য শুনলাম। নেত্রী তাকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন।
“এখানকার যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, এখানকার যে পরিস্থিতি- শান্ত করবার মত একটি লোক আপনারা পেয়েছেন। পরিস্থিতি ঘোলা না করে শান্তিপূর্ণভাবে সবকিছু সমাধান করবার মানসিকতা, চিন্তা চেতনা তার রয়েছে আমি মনে করি।”
জাতীয় স্বার্থে এবং শেখ হাসিনার জীবন রক্ষায় চট্টগ্রামে দলীয় নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান আমু।
দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু তার অর্থ এই হবে না যে জাতীয় স্বার্থের বেলায় আমরা একে অপরের ক্ষতি করার চেষ্টা করব।
“এই মনোবৃত্তি অবশ্যই সবাইকে পরিহার করতে হবে, শেখ হাসিনার জীবন রক্ষা এবং তার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থে। সবকিছু ভুলে গিয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে এই একটি বছর আমাদের কাজ করতে হবে।”
স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।
নগর কমিটির প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, যুগ্ম সম্পাদক এম এ রশিদ ও রেজাউল করিম চৌধুরী, শ্রমিক লীগ সভাপতি বখতেয়ার উদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী এটলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মশিউর রহমান চৌধুরী এবং যুবলীগ আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু।