৫ মাস পর চট্টগ্রামে ডিসি হিলে অনুষ্ঠান

চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের প্রাণকেন্দ্র ডিসি হিলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের বিধি-নিষেধ আর থাকছে না।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2018, 02:53 PM
Updated : 13 Feb 2018, 02:53 PM

প্রায় পাঁচ মাস ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক-সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিবাদের পর এই আভাস দিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান।

দীর্ঘ দিন পর মঙ্গলবার সকালে ডিসি হিলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ডিসি হিলের এ মঞ্চে গণহারে অনুষ্ঠান আয়োজনে আপনাদেরও (সংস্কৃতিকর্মী) আপত্তি ছিল। প্রতিদিন এক নাগাড়ে যে আয়োজন হত সাম্প্রতিক সময়ে তা আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি। কিছুটা কঠোর হয়েছি।

“কিন্তু সুস্থধারার সংস্কৃতিকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে নয়। এই যেমন বোধনের উৎসব ডিসি হিলে আয়োজনের জন্য আমরা সিলেক্ট করেছি।”

বোধন আবৃত্তি পরিষদ আয়োজিত বসন্ত উৎসব উদ্বোধন করে একথা বলেন বিভাগীয় কমিশনার।

বোধনের স্থায়ী কমিটির সদস্য সোহেল আনোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ডিসি হিল নিয়ে একটি সংশয় তৈরি হয়েছিল।

“আজ বিভাগীয় কমিশনার আশ্বস্ত করেছেন সুস্থ সংস্কৃতির চর্চায় তারা পৃষ্ঠপোষকতা করতে চান। অপসংস্কৃতির চর্চা বন্ধ করতে চান। একটি ভুল বোঝাবুঝির অবসান হল। আশাকরি সৃজনশীল ও বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চায় তারা সুযোগ দেবেন।”

বিভাগীয় কমিশনারের এই আশ্বাসের বিষয়ে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি সুনীল ধর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ডিসি হিল সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত থাকতে হবে।

“তবে একটি নীতি নির্ধারণী কমিটি থাকতে পারে যারা শব্দ মাত্রা থেকে শুরু করে অনুষ্ঠানের মান যাচাই ও অনুমতি প্রদানে কাজ করবে। তবে তা যেন আবার আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় না পড়ে।”

গত ২৩ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ডিসি হিলে বছরে তিনটি ছাড়া অন্য অনুষ্ঠান আয়োজন না করতে আহ্বান জানান।

এই তিন অনুষ্ঠান হল- পহেলা বৈশাখ এবং রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তী।

এরপর থেকেই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ডিসি হিলে আর কোনো সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া বন্ধ করে দেয়।

এর প্রতিবাদে ‘সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজ’ ও যুব ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন আন্দোলনে নামে। গত ১৩ ডিসেম্বর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানায়।

সুনীল ধর বলেন, মন্ত্রীর সিদ্ধান্তের একটি অজুহাত ছিল অপরিচ্ছন্নতা। কিন্তু সংস্কৃতিকর্মীরা নিজেরাই অনুষ্ঠানে আয়োজনের অনুষঙ্গ হিসেবে মঞ্চ ও ডিসি হিল পরিষ্কার রাখত।

বিভাগীয় কমিশনারের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সুস্থধারার সংস্কৃতি চর্চা’র কথা বিভাগীয় কমিশনার বলেছেন। তাহলে এতদিন যারা অনুষ্ঠানের আবেদন করে পাননি, তারা সবাই কি এই ধারার বাইরের?

“কোনো অজুহাত নয় আমরা চাই সংস্কৃতিবান্ধব জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা সংস্কৃতি লালনে পৃষ্ঠপোষকতা দিবেন, তারা যেন সংস্কৃতির নিয়ন্ত্রক না হন।”