থানায় হামলার ছক থানার মসজিদে বসেই: পুলিশ

চট্টগ্রামের সদরঘাট থানা প্রাঙ্গণে থাকা মসজিদে বসেই জঙ্গিরা ওই থানায় হামলার ছক এঁটেছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2018, 03:11 PM
Updated : 2 Jan 2018, 03:12 PM

সোমবার রাতে নগরীর সদরঘাট থানার পশ্চিম মাদারবাড়ির এক ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার ‘নব্য জেএমবির’ দুই সদস্য প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এতথ্যই দিয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন- আশফাকুর রহমান ওরফে আবু মাহির আল বাঙালী ওরফে রাসেল ওরফে সেলেবি তিতুশ (২২) এবং রাকিবুল হাসান ওরফে জনি ওরফে সালাহ উদ্দিন আয়ুবী ওরফে আবু তাইছির আল বাঙালী ওরফে হাসান (১৯)।

পুলিশের উপর হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বেশ কয়েকটি স্থাপনা রেকি করে তারা সদরঘাট থানাকে বেছে নিয়েছিল বলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এ এ এম হুমায়ুন কবীর জানান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “থানা প্রাঙ্গণে থাকা মসজিদে তারা বহুবার নামাজ পড়েছে। সেখানে বসেই তারা হামলার ছক এঁকেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।

“আত্মঘাতী হামলার জন্য থানা ও আশেপাশের এলাকার স্কেচ এবং পরিকল্পনা করে হাইকমান্ডের কাছে পাঠিয়ে তারা সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় ছিল।”

সদরঘাট রোডে থানা প্রাঙ্গণে মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করলে বাঁ পাশে দ্বিতল থানা ভবন এবং মূল ফটকের মুখোমুখি তিন তলা ট্রাফিক বিভাগ (উত্তর) এর কার্যালয়।

দুই ভবনের মাঝের পথ ধরে এগিয়ে গেলে ট্রাফিক ভবনের পেছনে দ্বিতল টিন শেড মসজিদ।

সোমবার রাতে দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের পর সদরঘাট থানার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

থানা সংলগ্ন কয়েকটি রাস্তা, থানা প্রাঙ্গণের ভেতরের স্থাপনা এবং আশেপাশের বিভিন্ন ভবনের অবস্থান উল্লেখ করে নকশা তৈরি করে জঙ্গিরা, যা উদ্ধার করেছে পুলিশ।  

হুমায়ুন বলেন, “কোন কোন পথে থানায় যাওয়া যায়। আশেপাশে কী আছে এসব তারা স্কেচে আঁকে।”

নকশায় দেখা যায়, লক্ষ্যস্থল হিসেবে সদরঘাট থানা ভবন লাল কালিতে আঁকা।

পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন বলেন, কথা বলা ও তথ্য আদান-প্রদানে তারা যে অ্যাপ ব্যবহার করেছিল, তাতেও তাদের পরিকল্পনার আভাস পাওয়া যায়।

‘নব্য জেএমবির’ সদস্যরা একে অন্যকে ছদ্মনামে সম্বোধন করত। ‘ওয়াইট হাউজ’, ‘নদীর মাছ’ ও ‘আবু আনাছ আল বাঙালী’ নাম ব্যবহার করে তিনজনের কথোপকথনের কিছু স্ক্রিনশট পুলিশের হাতে এসেছে।

এতে দেখা যায়, গত ১৬ নভেম্বর নওগাঁয় অস্ত্রসহ পাঁচ জেএমবি সদস্য আটকের বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়।

নওগাঁয় আটক পাঁচ জনের মধ্যে একজনের নাম মাসুদ রানা। তিনিই ‘ওয়াইট হাউজ’  নামে যোগেোযগ করতেন বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি।

গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে সদরঘাট থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে। তাদের রিমান্ডেও নিয়েছে পুলিশ।

থানায় নাশকতার পরিকল্পনায় জড়িত মিসবাহ উদ্দিন ও জীবন ইসলামকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।