৭৮ বছর বয়সী এই লেখককে গত সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার সহযোগী এবং বিভিন্ন বইয়ের প্রকাশক আলাউদ্দিন খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রমা চৌধুরী ডায়বেটিস, ব্রংকাইটিসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।
রমা চৌধুরীর পিত্তথলীতে পাথরও রয়েছে। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাও অপসারণ করা যাচ্ছে না বলে জানান খোকন।
গত জুন মাসেও হাসপাতালে ভর্তি হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়েছিলেন রমা চৌধুরী।
খোকন বলেন, “অর্থাভাবে দীর্ঘসময় ধরে এ লেখিকার সঠিকভাবে চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না।”
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা রমা চৌধুরী ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশা হিসেবে জীবনে তিনি শিক্ষকতাকে বেছে নিয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ১৩ মে তিন শিশু সন্তান নিয়ে বোয়ালখালীর পোপাদিয়ার গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন রমা চৌধুরী, এসময় তার স্বামী ছিলেন ভারতে। ওই ঘটনার পর থেকেই খালি পায়ে হাঁটেন রমা চৌধুরী।
এলাকার রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি বাহিনী রমা চৌধুরীর বাড়িতে হানা দেয়, ধর্ষণের পর তাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় হানাদাররা। রমা চৌধুরীর দুই সন্তান সাগর (৫) ও টগর (৩) এই ঘটনার দুই বছরের মধ্যেই মারা যান। তার আরেক সন্তান মারা যায় সড়ক দুর্ঘটনায়।
রমা চৌধুরী ’৭১ এর জননী’, ‘এক হাজার এক দিন যাপনের পদ্য’, ‘ভাব বৈচিত্র্যে রবীন্দ্রনাথ’সহ ১৯টি বই লিখেছেন তিনি। চট্টগ্রাম নগরীতে খালি পায়ে বিচরণ এই বীরাঙ্গনার।
নিজের লেখা বই নিজেই বিক্রি করতেন তিনি। একাকী রমা চৌধুরী নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে লুসাই ভবনের একটি কক্ষে থাকেন। তার সঙ্গী একটি পোষা বেড়াল।
২০১৩ সালের ২৭ জুলাই রমা চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
নিজের লেখা বই বিক্রি করে একটি অনাথ আশ্রম গড়ার স্বপ্ন রমা চৌধুরীর।