নিহত ওমর ফারুক (৩০) মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার মেহেদীনগর এলাকার সুজাউল হকের ছেলে। তিনি উপজেলার বারৈয়াহাট এলাকায় কাপড়ের হকারি করতেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদ্দৌলা রেজা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শুক্রবার সকালে জোরারগঞ্জ থানার সোনাপাহাড় এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের পর তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ফারুকের সাবেক স্ত্রী জেসমিন সুলতানা (২৫), শ্যালিকা আবিদা সুলতানা ও জেসমিনের প্রেমিক নুরুল আবছার ওরফে রুবেল (২২) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা মশিউদ্দৌলা জানান।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদুল কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে লাশ উদ্ধারের পর আমরা স্থানীয়দের কাছ থেকে লাশটি ফারুকের বলে জানতে পারি। পরে তদন্ত করে হত্যার কারণ অনুসন্ধান করি।”
ওসি জানান, পাঁচ বছর আগে ফারুকের সাথে জেসমিনের বিয়ে হয়। বছর খানেক আগে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তাদের ঘরে সাড়ে তিন বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার নাঙ্গলমুরায় জেসমিনদের বাড়ি হলেও তারা জোরারগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকতেন। যেখান থেকে ফারুকের লাশ উদ্ধার করা হয় তার থেকে কয়েকশ গজ দূরে তাদের বাসা।
হত্যকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে ওসি জাহিদুল বলেন, ছাড়াছাড়ির পর জেসমিনের সঙ্গে রুবেলের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তবে তা ওমর ফারুক মেনে নিতে পারেনি। বিভিন্ন সময়ে ফারুক জেসমিনকে আবার নিজের কাছে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও সে ফিরে আসেনি।
এছাড়া ফারুক তার শ্যালিকা আবিদাকেও বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিল বলে জেসমিন পুলিশকে জানায়।
পুলিশ বলছে, জেসমিন ফিরে না আসায় ফারুক বিভিন্নভাবে তাকে ভয়ভীতি দেখাত। এর জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
ওসি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ওমর ফারুককে ডেকে নিয়ে জেসমিন, রুবেল ও আবিদা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ মহাসড়কের পাশে ফেলে যায়। লাশ উদ্ধারের পর ফারুকের সাবেক শ্বশুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফারুকের ছোট ভাই মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে এ ঘটনায় জোরাগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন।