বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু ছালেম মো. নোমানের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে মোক্তার এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়ার কথাও স্বীকার করেন ।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী সাহাবুদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রায় দুই ঘণ্টার জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের পুরো বর্ণনা দিয়েছেন মোক্তার।
“ঘটনায় জড়িত ১২-১৫ জনের নাম বলেছেন মোক্তার। তবে তিনি নির্দেশদাতার নাম জানেন না বলে জানিয়েছেন। বড় ভাইদের নির্দেশে হত্যার ঘটনায় অংশ নেন বলে স্বীকার করেছেন মোক্তার।”
আদালত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জবানবন্দিতে মোক্তার ঘটনার আগের দিন লালখান বাজারে পরিকল্পনা হওয়ার কথা জানিয়ে সম্পৃক্ত ১২-১৫ জনের নাম জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছিল অন্তত ১৫টি অটোরিকশা ও তিনটি মোটর সাইকেলে করে হত্যাকারীরা সুদীপ্তকে হত্যার উদ্দেশে গিয়েছিল।
গত ৬ অক্টোবর নগরীর দক্ষিণ নালাপাড়ায় নিজ বাসার সামনে নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
পরদিন মোক্তার কক্সবাজার পালিয়ে যান। সন্তানের অসুখের খবর পেয়ে মঙ্গলবার তিনি চট্টগ্রাম চলে আসেন। পরে স্ত্রীর অনুরোধে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার সময় শুক্রবার রাতে বাস কাউন্টারে ধরা পড়েন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের পর নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগর ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানিয়েছিলেন, নগরীর লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারীরাই সুদীপ্তকে পিটিয়ে মেরেছে বলে তাদের সন্দেহ।
ছাত্রলীগের একাংশের নেতাদের ভাষ্য, বিগত কয়েক দশক ধরে সিটি কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীরা থাকলেও কয়েক বছর ধরে তার বিপরীতে একটি অংশ দাঁড়িয়েছে। তাদের একাংশের নেতৃত্বে আছেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দিদারুল।
সুদীপ্তর সহপাঠীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের মধ্যকার বিভেদ নিয়ে সুদীপ্ত ফেইসবুকে লেখালেখি করতেন। তাতেই ওই অংশের নেতারা তার প্রতি ক্ষিপ্ত হন বলে মনে করছেন অনেকে।
মোক্তার ছাড়াও এই ঘটনায় খাইরুল নূর ইসলাম ওরফে খায়ের এবং আমির হোসেন ওরফে বাবু নামের দুই যুবককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার এই দুইজনকে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার এ আবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।