চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দুইপক্ষে সংঘর্ষ

বন্দরনগরীর চট্টগ্রাম কলেজে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2017, 07:32 AM
Updated : 16 Oct 2017, 08:13 AM

সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুই পক্ষের বিরোধ শুরু হয়; সংঘর্ষে অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ উভয় পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে লাঠিপেটা করে।

এর আগে রোববারও কলেজ ক্যাম্পাসে সম্মান (স্নাতক) শ্রেণির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন উপলক্ষে ব্যানার টাঙ্গানো নিয়ে ‍দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে জড়ানো দুইপক্ষের একটির নেতৃত্বে আছেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল করিম এবং অন্যটির নেতৃত্বে সুভাষ মল্লিক সবুজ।

এদের মধ্যে সুভাষ মল্লিক চকবাজারের যুবলীগ নেতা নূর মোস্তফা টিনুর অনুসারী। আর মাহমুদুল করিমের পক্ষটি নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির অনুসারী।

নগরীর রাজনীতিতে নূর মোস্তফা টিনু প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির এবং রনি নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানায়, সকাল ১০টার দিকে সুভাষ মল্লিকের অনুসারীদের একজন কলেজের মূল ফটক সংলগ্ন ব্যাংকের কাছে এলে তাকে অপর পক্ষের ছেলেরা মারধর করে। এরপর থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষের মধ্যে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুই পক্ষই মুখোমুখি হয়ে পড়লে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে মাহমুদুল করিমের অনুসারীদের গণি বেকারির দিকে এবং ‍সুভাষ মল্লিকের অনুসারীদের চকবাজারের দিকে সরিয়ে দেয়।

এরপর বেলা পৌনে ১২টার দিকে সুভাষ মল্লিকের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা লাঠিশোঠা নিয়ে কলেজ রোডে কয়েক দফা মিছিল করে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে সরিয়ে দেয়।

পরে সুভাষের অনুসারীরা আবার কলেজের পশ্চিম গেইটের কাছে জড়ো হয়। তখন পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের চকবাজারের দিকে সরিয়ে দেয়।

বেলা সোয়া ১২টার দিকে মাহমুদুল করিমের অনুসারীরা মিছিল নিয়ে একই এলাকায় আসতে চাইলে পুলিশ লাঠিপেটা করে।  

পুলিশের লাঠিপেটায় চট্টগ্রাম কলেজ সংলগ্ন মহসিন কলেজের অ্যাকাউন্টিং চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আনোয়ার পলাশসহ অন্তত পাঁচ জন আহত হয়েছে বলে ঘটনাস্থল থেকে জানান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন উত্তম সেনগুপ্ত।

এদের মধ্যে আহত চার শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেছেন বলে হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান।

এরা হলেন- চট্টগ্রাম কলেজের স্নাতকোত্তর শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী গিয়াস উদ্দিন (২৬) ও স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রাহুল শীল (২৪) এবং হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হানিফ সুমন (২০) ও উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের আল রিয়াদ (১৮)।

আহতদের আঘাত তেমন গুরুতর নয় বলে জানান পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার।

সংঘর্ষের বিষয়ে সুভাষ মল্লিক সবুজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাহমুদুল করিমের ছেলেরা গতকাল আমাদের ব্যানার ছিঁড়ে দেয়। এ নিয়ে গতকাল সমস্যা সৃষ্টি হয়। আগেও আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।

“আজ সকালে তারা ক্যাম্পাসে এসে আমাদের পক্ষের ছয়জনকে মারধর করে।”

মাহমুদুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বহিরাগতদের ইন্ধনদাতা টিনুর অনুসারীরা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশলীতা সৃষ্টি করেছে এবং আমাদের উপর হামলা করেছে।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কলেজে গতকাল থেকে উত্তেজনা ছিল। আজ দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে সরিয়ে দিই।