রোববার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ শুরুর পর পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দেয়। এরপর তারা বকশির হাটে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গিয়ে রাতে আবার নগরীর প্রবেশপথ কর্ণফুলী সেতু এলাকার গোল চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখায়।
গত চার বছরে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধে খুন হন দুই ছাত্রলীগ নেতা। এরপর তিন বছর আগে কেন্দ্র থেকে আহ্বায়ক কমিটি স্থগিত করা হয়েছিল।
রোববার বিকালে কেন্দ্র থেকে এস এম বোরহান উদ্দিনকে সভাপতি এবং আবু তাহেরকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্যের কমিটির ঘোষণা আসে।
ঘোষিত কমিটিতে ২৩ জন সহসভাপতি, নয়জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, নয়জন সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আরও আটজন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন শনিবার এই কমিটি অনুমোদন করেন।
কমিটি ঘোষণার পরপরই বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ৩০ জন যুবক মিছিল নিয়ে এসে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়। সেখান তারা নির্মাণাধীন ভবনের নির্মাণ সামগ্রী জড়ো করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়।
সড়কে তাদের অবস্থানের কারণে সড়কের একাংশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধরা কয়েকটি গাড়িতেও বাঁশ দিয়ে আঘাত করে।
এসময় জামালখান এলাকার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ করছিল। তাদের সরিয়ে দিয়েছি। কর্ণফুলী সেতুর গোল চত্বরে তারা অবস্থান নিয়েছে। সেখানে আমরাও আছি।”
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মিজান ও মনজুর নামের দুজন সাংবাদিকদের বলেন, সভাপতি করা হয়েছে তিনি ইসলামী ছাত্র সেনায় যুক্ত ছিলেন এক সময়। আর সাধারণ সম্পাদকও অচেনা।
সভাপতি বোরহান উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি কখনোই ইসলামী ছাত্র সেনার রাজনীতি করিনি। একই নামের অন্য একজন ছিলেন। এ অভিযোগ তারা আগেও করেছে। কেন্দ্র থেকে যাচাই করেই কমিটি দেওয়া হয়েছে।”
কমিটিতে ৫১ জনের নাম ঘোষণা হলেও আরও একশ জনের পদ খালি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাদের (বিক্ষোভকারী) রাখা হবে।”
ঢাকায় ছাত্রলীগের সমাবেশ শেষে ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রামে ফেরার পথে গাজীপুরের নিমতলী স্টেশনে ট্রেন থেকে পড়ে মারা যায় লোহাগাড়ার ছাত্রলীগকর্মী তরিকুল ইসলাম।
ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে তরিকুলকে ফেলে দেয়া হয় বলে ওইদিন অভিযোগ করে লোহাগাড়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনার পরদিন ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
এরআগে ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কেক কাটা নিয়ে বিরোধের জেরে নগরীর বকশির হাট এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আব্দুল মালেক জনি।