সুদীপ্ত হত্যায় ইন্ধনদাতাদেরও গ্রেপ্তার চায় ছাত্রলীগ

সুদীপ্ত বিশ্বাসের খুনিদের ছাড়াও এই হত্যাকাণ্ডে ইন্ধনদাতা ‘গডফাদারদের’ গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে নগর ছাত্রলীগ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Oct 2017, 09:31 AM
Updated : 15 Oct 2017, 09:31 AM

রোববার দুপুরে নগরীর লালদীঘি মাঠ সংলগ্ন জেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।

ছাত্রলীগের অবস্থান কর্মসূচি যেখানে চলছিল তার ঠিক বিপরীতেই চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কার্যালয়।

ছাত্রলীগ নেতা ‘সুদীপ্তি বিশ্বাসের হত্যাকারী ও ইন্ধনদাতাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে’ শুরুতে নগর পুলিশের কমিশনারকে ঘেরাওয়ের কথা থাকলেও পরে তা বদলে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগ।

কর্মসূচিতে নগর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, “হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে আমরা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

“আমাদের প্রিয় নেত্রী দেশ পরিচালনা করছেন। প্রশ্ন জাগে এমন কারা আছে যারা ছাত্রলীগের রক্ত নিয়ে হোলি খেলতে চায়। সন্ত্রাসীরা কারও আপন হতে পারে না, সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসীই। তাদের কোনো দল নেই।”

যাদের ইন্ধনে সুদীপ্তকে হত্যা করা হয়েছে তাদেরও গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “এর আগে নাসিম আহমেদ সোহেলকে হত্যা করা হল। দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে হত্যা করল। হত্যাকারীরা পালিয়ে গেল। প্রশ্ন জাগে এমন কোন অপশক্তি আছে যে ছাত্রলীগ নেতাদের একের পর এক হত্যা করা হবে কিন্তু তারা গ্রেপ্তার হবে না।”

হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

গত ৬ অক্টোবর সকালে সুদীপ্তকে নগরীর দক্ষিণ নালাপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী।

এ ঘটনায় মোক্তার হোসেন নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়ে, যিনি সুদীপ্ত হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।

সুদীপ্ত হত্যার পর থেকে একাধিক ছাত্রলীগ নেতা অভিযোগ তুলেছিলেন, লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারীরাই সুদীপ্তকে পিটিয়ে মেরেছে। গ্রেপ্তার মোক্তার দিদারুলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

রোববার সমাবেশে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি বলেন, “আমাদের প্রশ্ন হলো সুদীপ্ত হত্যার বিচার হবে কি হবে না? আসামিরা গ্রেপ্তার হবে কি হবে না?

“একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বরাত দিয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে লালখান বাজারে বৈঠকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়। কার নির্দেশে হতাকাণ্ড ঘটানো হলো?”

রনি বলেন, ভিডিও ফুটেজসহ সব তথ্য পুলিশের কাছে আছে। কার নির্দেশে হত্যার পর পাঁচ ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিবৃতি দিয়েছিল?

“দিয়াজকে হত্যার পর কেন আত্মহত্যা বলা হয়েছিল? মেহেদী হাসান বাদলকে হত্যার পর নেতৃবৃন্দ কেন গুপ্তহত্যা বলেছিল? সোহেল হত্যার পর কেন ভিসির পদত্যাগ দাবি করা হয়েছিল? কারণ একটাই খুনিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। প্রত্যেকটি একই সূত্রে গাঁথা।”

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুল্লাহ আনসারী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজিজুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান তারেক, আবু তৈয়ব সুমন, রুম্মান চৌধুরী, নাজমুল হাসান রুমি প্রমুখ।

সমাবেশে সরকারি সিটি কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, এমইএস কলেজ, কর্মাস কলেজ এবং ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

এর আগে গত ১০ অক্টোবর শহীদ মিনারে সমাবেশ করে হত্যকারীদের গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় নগর ছাত্রলীগ। আগের দিন মুসলিম ইন্সটিটিউটে এক স্মরণ সভায় ছাত্রলীগের বিক্ষোভের মুখে সুদীপ্তর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।