‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদ’ নামে এ সংগঠনটি শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, গৃহকরের নতুন হার বাতিল করে আগের হার বহালের দাবিতে রোববার সকাল ১০টায় নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে।
জালালাবাদ, উত্তর আগ্রাবাদ, উত্তর পাঠানটুলী, পশ্চিম মাদারবাড়ি, পাঠানটুলি, গোসাইলডাঙ্গা, মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ও উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে এই কর্মসূচির পর সাড়ে ১০টায় কাউন্সিলর অফিসে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
লিখিত বক্তব্যে ‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আমির উদ্দিন বলেন, দেশের নাগরিকরা প্রতি অর্থবছরে ব্যয় বাদ দিয়ে আড়াই লাখ টাকার বেশি জমা অর্থের ওপর আয়কর দিয়ে থাকে। অথচ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কোনো করসীমা নির্ধারণ না করে ১০ মাসের ঘর ভাড়ার ওপর ১৭ শতাংশ কর বসিয়ে দিয়েছেন।
নতুন আরোপিত হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিলের দাবিতে তারা বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের আবেদন নিবেদনের পরও সিটি করপোরেশন একগুঁয়েমিভাবে কর আদায়ের জন্য নাগরিকদের কাছ থেকে আপিল আহ্বান করে আসছে।”
তবে যে হারে এ কর নির্ধারণ করা হয়েছে তা ৫০ শতাংশ কমালেও পরিশোধ করতে হিমসিম খেতে হবে বলে মনে করেন সংগঠনের নেতারা।
আমির উদ্দিন বলেন, বৃষ্টি কিংবা জোয়ারের পানিতে মুরাদপুর-বহদ্দারহাট-চান্দগাঁও-চকবাজার-বাকলিয়া-খাতুনগঞ্জ-আগ্রাবাদ-হালিশহরসহ চট্টগ্রামের তিন চতুর্থাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করে বর্তমান মেয়র হোল্ডিং ট্যাক্সের বোঝা চাপানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।
চট্টগ্রামে নতুন আরোপিত হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিলের দাবিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর নগরীর কদমতলী এলাকায় সমাবেশ করে ‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদ’। সেখান থেকে সাতদিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল।
আমিরের অভিযোগ, সিটি করপোরেশন বিষয়টিতে কর্ণপাত না করে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় অব্যাহত রেখেছে।
সংগঠনের সভাপতি নুরুল আবছার বলেন, বর্তমানে হোল্ডিং ট্যাক্স ৯ থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এতে করে বর্ধিত এ টাকা বাড়ির মালিকরা ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে আদায় করতে বাধ্য হবে।
আর এতে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়া বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে বলেও মনে করেন তিনি।
নুরুল আবছার আরও বলেন, বর্তমান মেয়র হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়ে ১৯৮৬ সালের অর্ডিন্যান্সের কথা বলে। কিন্তু ওই সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ছয়জন মেয়র দায়িত্ব পালন করলেও তারা কেউ এ হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করেনি।
বর্তমান মেয়রই এ হোল্ডিং ট্যাক্সের আদায় করতে চাইছে।
এদিকে করপোরেশনের আরোপিত এ হোল্ডি ট্যাক্সের বিরোধিতা করে আসছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।
গত ২ অক্টোবর জরুরি সভা করে সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র আ জ ম নাছিরের প্রতি ‘যুক্তিযুক্ত’ করবৃদ্ধির প্রস্তাব দেন। যদিও ওই সভায় ছিলেন না নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
এ বিষেয়ে গত বুধবার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন বর্তমান মেয়র নাছিরকে চিঠিও দিয়েছেন।
শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদের উপদেষ্টা হাজী জালাল আহমেদ, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস পপিসহ সংগঠনের নেতারা।