ড্রামের ভেতর লাশ: গ্রেপ্তার অমিতের ‘স্বীকারোক্তি’

চট্টগ্রামে দিঘী থেকে ড্রামের ভেতরে লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার যুবলীগকর্মী অমিত মুহুরী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2017, 02:47 PM
Updated : 4 Oct 2017, 05:49 AM

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, রোববার বিকালে চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমানের আদালতে হাজির করা হলে অমিত ‘হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে’ জবানবন্দি দেন।

গত ১৩ অগাস্ট নগরীর কোতোয়ালি থানার এনায়েত বাজার রানীর দিঘী থেকে সিমেন্ট ঢালাই করা ড্রামের ভেতরে থেকে ইমরানুল করিম ইমন নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তদন্তে নেমে ইমনের বন্ধু অমিতকে পুলিশ খুঁজতে শুরু করে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়ে কুমিল্লায় চলে যান অমিত। সেখানে তিনি একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি হন; চুল দাড়ি কেটে বেশভূষা পাল্টে ফেলেন।

অমিতের এই ছবি ছিল পুলিশের কাছে

পুলিশের কাছে থাকা ছবির সঙ্গে পুরোপুরি মেলানো না গেলেও গলার বাঁ পাশে ও ডান হাতে আঁকা উল্কির কারণে তদন্তকারীরা তাকে ঠিকই চিনে ফেলেন। শনিবার কুমিল্লার আদর মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে গ্রেপ্তার হন অমিত।

সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “অমিত তার জবানবন্দিতে বলেছেন, তার স্ত্রীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন ইমন। এ কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।”

এ ঘটনায় এর আগে গ্রেপ্তার শিশির ও শফি নামের দুইজন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছিলেন, গত ৯ অগাস্ট নগরীর নন্দনকান ৩ নম্বর গলির হরিশদত্ত লেইনে বেঙ্গল হোল্ডিংসের ষষ্ঠ তলায় অমিতের বাসায় ইমনকে হত্যা করা হয়। পরে ড্রামে ভরে চুন, এসিড দিয়ে সিমেন্ট ঢালাই করে সেই ড্রাম ফেলে দেওয়া হয় দিঘীর পানিতে।

পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর বলেন, “শিশির তার জবানবন্দিতে দাবি করেছিলেন, অমিত নিজে ইমনকে খুন করে। তবে অমিত বলেছে, ইমনের গলায় ছুরি চালিয়েছিল শিশির। আর সে নিজে মারধর করেছে।”

ওই হত্যাকাণ্ডে বেশ কয়েকজন জড়িত জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা প্রধান সন্দেহভাজন অমিত ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের ধরতে কাজ চলছে।”

নিজেকে যুবলীগ ‘নেতা’ পরিচয় দেওয়া অমিত কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী। সিআরবিতে রেলের দরপত্র নিয়ে জোড়া খুনেরও অন্যতম আসামি তিনি।

সিআরবির জোড়াখুন ও ইমন খুনসহ অমিতের বিরুদ্ধে মোট ১৩ টি মামলা আছে বলে পুলিশ জানায়।

গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাথে ডিসি হিলে পুলিশের ওপর হামলা, বাকলিয়া এলাকায় ছাত্রলীগ নেতাকে গুলি করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আছে অমিতের বিরুদ্ধে।

ড্রামে লাশ উদ্ধার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই মো. হারুণ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অমিত দায় স্বীকার করলেও এ মামলায় আরও তদন্ত প্রয়োজন। তাই অমিতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন তারা।

রোববার জবানবন্দি শেষে আমিতকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক। রিমান্ড আবেদনের শুনানি পরে হবে বলে এসআই হারুণ জানিয়েছেন।