কোরবানির বর্জ্য অপসারণে সন্তুষ্ট চট্টগ্রাম নগরবাসী

ঈদুল আজহার দিন বিকেলের মধ্যেই নগরীর বেশিরভাগ এলাকা থেকে  কোরবানির বর্জ্য অপসারণে সিটি করপোরেশনের তৎপরতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম শহরের বাসিন্দারা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2017, 01:31 PM
Updated : 2 Sept 2017, 01:31 PM

শনিবার বিকাল ৫টার মধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে পড়ে থাকা খুব-একটা দেখা যায়নি।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের দাবি, বিকাল ৩টার মধ্যেই শহরের প্রায় সব জায়গা থেকে বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয়েছে।

বিকাল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে আন্দরকিল্লা, চকবাজার, চন্দনপুরা, কাজীর দেউড়ি, দুই নম্বর গেইট, মুরাদপুর, খুলশীসহ কয়েকটি স্থানে ঘুরে বেশিরভাগ এলাকার বর্জ্য অপসারণ হয়েছে বলেই দেখা গেছে।

নগরীর হালিশহর আই ব্লক এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেলা ২টার দিকে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা আসে।

“আগে থেকেই এলাকার বাসিন্দারা যার যার বর্জ্য গলির মুখে রেখে দিয়েছিল। সেখান থেকে তারা আর্বজনা নিয়ে গেছে।”

সকালে নগরীর সদরঘাট, চকবাজার, চট্টগ্রাম কলেজের পূর্ব গেট ও চন্দনপুরা এলাকায় সড়কে সারিবদ্ধভাবে গরু কোরবানি দিতে গেছে।

বিকাল পৌনে ৫টায় ওইসব এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ বর্জ্যই সরিয়ে নিয়েছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা আতিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মূল সড়কের পাশাপাশি অলিগলি থেকেও আর্বজনা নিয়ে গেছে।

পাহাড়তলি ওয়ার্ডের সরদার বাহাদুর নগর এলাকার বাসিন্দা মো. আরিফ বিকাল সাড়ে ৫টায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একদফায় আর্বজনা নিয়ে গেলেও সব পরিষ্কার হয়নি।

“তবে একটু আগে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আবার এসেছেন। তারা কাজ করছেন।”

শনিবার দুপুরে নগরীর আন্দরকিল্লায় নিজ বাসায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সিটি মেয়র নাছির।

এসময় প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বিকেল পাঁচটার মধ্যে পুরো নগরে পশু বর্জ্য অপসারণ আমরা করব।

“ইনশাল্লাহ তারও অনেক আগে তিনটার মধ্যে চট্টগ্রাম শহরে আমরা প্রায় সব জায়গায় বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি।”

নগরবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে মেয়র বলেন, “দুর্ভাগ্যের বিষয়, গতকালই বাসায় পড়ে গিয়ে পায়ে একটা ফ্র্যাকচার হয়েছে। যার কারণে একান্ত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাসা থেকে বের হতে পারছি না।

“সম্পূর্ণভাবে বেড রেস্টে থাকতে হবে ২১ দিন। তাই পুরো শহরটা প্রদক্ষিণ করার কথা থাকলেও পারিনি। আমি না পারলেও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে একাধিকবার সভা করেছি গতকাল বাসায়। সকাল থেকে যোগাযোগ করেছি।”

‘আগামী বছর হবে’

সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ৩৬১টি স্থানে পশু কোরবানিতে এবার তেমন সাড়া মেলেনি। 

নগরীর প্রায় সব স্থানের পাড়া-মহল্লায়, প্রধান সড়ক এবং অলিগলিতেও এবার পশু কোরবানি হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি মেয়র নাছির উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটা অনুশাসন জারি করেছেন। সেই অনুশাসন বাস্তবায়নের জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি।

“রাস্তার ধারে কোরবানি দাতা যারা আছেন উনাদের আমরা অনুরোধ করেছি, বিজ্ঞাপন দিয়েছি, মাইকিং করেছি; যাতে পশু কোরবানি দাতারা নিজস্ব আঙিনায় অথবা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্ধারিত জায়গায় কোরবানি দেন।”

নির্ধারিত স্থানগুলোতে ত্রিপল, বসার ব্যবস্থা ও হালাল উপায়ে কোরবানি দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হলেও নগরবাসীর সাড়া মেলেনি বলে মেয়র কিছুটা হতাশ।  

“জবরদস্তি তো আমরা করতে পারি না। এ পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি, অন্য বছর যারা রাস্তার ধারে কোরবানি করেছেন এবার তারা চেষ্টা করেছেন নিজস্ব জায়গায় কোরবানি করতে। হয়ত অনেকে নির্ধারিত স্থানে যেতে পারেননি তবে খুব দ্রুত বর্জ্য অপসারণে আমাদের সহায়তা করেছেন।”

আগামী বছর কোরবানি নির্ধারিত স্থানে করার বিষয়ে সফল হবেন বলে আশাবাদী মেয়র।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মেয়রের সঙ্গে ছিলেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন ও প্যানেল মেয়র হাসান মাহমুদ হাসনী।