পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় যুবক গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে থাকেন বগুড়া। মাস ছয়েক আগে বয়সে প্রায় দ্বিগুণ বয়সী এক নারীর সঙ্গে ফেইসবুকে পরিচয়, সেখান থেকে ফোনালাপ, প্রণয়। ব্যক্তিগত ছবি সংগ্রহ করে ইউটিউবে প্রচার করে টাকা আদায়।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2017, 10:36 AM
Updated : 13 July 2017, 11:21 AM

চট্টগ্রামে তথ্যপ্রযুক্তি ও পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের এক মামলায় ইমরান সরকার (১৮) নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা।

গ্রেপ্তার ইমরান গাইবান্ধার গোরিন্দগঞ্জ উপজেলার নাগের ভিটার বাসিন্দা তাজউদ্দিন সরকারের ছেলে।

বগুড়া সদর থেকে বুধবার গ্রেপ্তারের পর রাতে তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে পুলিশ।

চট্টগ্রামের বাসিন্দা এক নারীকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করে টাকা দাবির অভিযোগে নগরীর চান্দগাঁও থানায় ‘তথ্যপ্রযুক্তি ও পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে’ গত ১ জুলাই দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইলিয়াছ খান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, ইমরান নিজের পরিচয় গোপন করে ‘কাব্য শাহরিয়ার’ নামে একটি ফেইসবুক আইডি থেকে অভিযোগকারী নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

গত মার্চে তিনি ওই নারীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নেন। পরে আরও টাকা চাইলে ওই নারী না দেওয়ায় ব্যক্তিগত ফোনালাপ ও বিভিন্ন ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশ করে দেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ইমরান পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তির সঙ্গে জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে বৃত্তি পান। ২০১৪ সালে গাইবান্ধার গুগা আব্দুল জলিল হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করে চট্টগ্রাম চলে আসেন। গত বছর নগরীর বেপজা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে বগুড়া চলে যান।

বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার কোর্সও করছেন। গত বছর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেও বিষয় পছন্দ না হওয়ায় ভর্তি হননি।

পড়াশুনায় ভালো হওয়ার পরও পরিবারের নজরদারি না থাকা এবং ইন্টারনেটের অপব্যবহারের কারণে ইমরান অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে বলে ভাষ্য পুলিশ কর্মকর্তাদের।

গোয়েন্দা পরিদর্শক ইলিয়াছ খান বলেন, “গত বছর ডিসেম্বরে অভিযোগকারী ওই নারীর সঙ্গে ফেইসবুকে পরিচয় হয় বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে ইমরান। নিজেকে বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয় দিয়ে প্রবাসে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে ওই নারীকে বলেছিলেন তিনি।

“এসময় ওই নারীর কাছ থেকে দুই লাখ ধার চাইলে গত ৪ মার্চ এসএ পরিবহনের মাধ্যমে টাকা দেয়। এ টাকা দিয়ে বগুড়ার এক কলেজ ছাত্রীকে বিয়েও করে বলে স্বীকার করেছেন ইমরান।”

পুলিশ কর্মকর্তা ইলিয়াছ বলেন, “একমাস পরে ইমরান ওই নারীর কাছ থেকে আরও দুই লাখ টাকা দাবি করলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় তাদের মধ্যে বিনিময় করা ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশ করে ওই নারীকে তার লিঙ্ক পাঠান তিনি।

“এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ওই নারীকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য ইউটিউবে আরও ছবি প্রকাশের হুমকি দেয়। এতে ভয় পেয়ে ওই নারী এক লাখ ৪০ হাজার, ২০ হাজার ও ১০ হাজার করে তিন দফায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দেয়।”

চার ভাই দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় ইমরান চট্টগ্রামে এসে বন্ধুদের মাধ্যমে ফেইসবুক ব্যবহার শুরু করেন।

‘ইমরান সরকার’ নামে তার একটি আইডি থাকলেও ‘কাব্য শাহরিয়ার’ নামে ওই ভুয়া আইডি চালায় বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি।