সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে আসছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার বিভিন্ন প্রাণীকে দর্শনার্থীদের বিরক্তি থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি প্রাণী নিরাপত্তায় ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2017, 12:09 PM
Updated : 7 July 2017, 12:09 PM

পুরো চিড়িয়াখানা জুড়ে এসব সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে বলে জানান চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিব ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আগে চিড়িয়াখানার টিকিট কাউন্টার ও প্রধান ফটকে সিসি ক্যামেরা থাকলেও এখন পুরো চিড়িয়াখানা জুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।”

অরণ্য থেকে লোকালয়ে এসে খাঁচায় কাটানো চিড়িয়াখানার প্রাণীদের প্রতি আগ্রহের কমতি নেই জনসাধারণের। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষেরও লাভের অঙ্ক বাড়ছে প্রতিবছর।

দর্শনার্থীদের আগ্রহের কারণে একদিকে যেমন বাইরে থেকে আনা হচ্ছে বিভিন্ন প্রাণী, তেমনি বংশবিস্তারের মাধ্যমেও চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বাড়ছে প্রাণীর সংখ্যা।

অনেক সময় খাঁচায় বন্দি এসব প্রাণীর বিরক্তির কারণ হয়ে যায় দর্শনার্থীদের বিদ্রুপপূর্ণ আচরণ। কর্তৃপক্ষের নিষেধ শর্তেও অনেক দর্শনার্থী এসব প্রাণীকে নানাভাবে বিরক্ত করে থাকেন।

মানুষের বিদ্রুপপূর্ণ এমন আচরণ থেকে প্রাণীগুলোকে রক্ষা করতেই প্রাথমিক পর্যায়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ১৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে বলে বলে জানান চিড়িয়াখানা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিব রুহুল আমিন।

তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমিক ভাবে আরও সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।

‘ওয়েব বেইসড’ এসব সিসি ক্যামেরা জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, তিনি নিজে ও চিকিৎসক শাহাদাৎ হোসেন শুভ সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করবেন বলে জানান প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম নগরীর ফয়’স লেক এলাকায় ছয় একর জায়গা নিয়ে নির্মিত হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ চিড়িয়াখানায় বর্তমানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাথি, বাঘ, সিংহ, হরিণ, কুমির, ভাল্লুকসহ প্রায় ৪৭ প্রজাতির প্রাণী।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার চিকিৎসক ও ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কিউরেটরের দায়িত্বে থাকা শাহাদৎ হোসেন শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে এ চিড়িয়াখানায়। এদের মধ্যে অনেকে কৌতুহল বশত প্রাণীদের খাঁচায় বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র, ঢিল ছুঁড়ে মারে ও কিছু দিয়ে খোঁচাতে বা আঘাত করে থাকে।

“এসব কারণে প্রাণীগুলোর মধ্যে অনেক সময় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, হিংসাত্মক মনোভাব দেখায়। এছাড়াও অনেক সময় হরিণ ও বানর নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।”

সিসি ক্যামেরা প্রতিস্থাপনের ফলে দর্শনার্থীদের এসব বিদ্রুপ আচরণ থেকে প্রাণীগুলো রক্ষা পাবে বা নিজেদের মধ্যে কলহে আঘাত পাওয়ার আগে তা নিরসন করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।

সিসি ক্যামেরাগুলো বাঘ, সিংহ, হরিণ, বানর ও কুমিরের খাঁচার দিকে বেশি রাখা হবে। আর বাকিগুলো চিড়িয়াখানার বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হবে বলে জানান শুভ।

ক্যামেরা প্রতিস্থাপনের পাশাপাশি সাউন্ড সিস্টেমও করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব ক্যামেরা মোবাইল থেকেও মনিটরিং করা যাবে। কোনো খাঁচায় কোনো ধরনের সমস্যা নজরে এলে সাউন্ড দেওয়া হবে।

এতে করে দায়িত্বরতরা দ্রুত তা নিরসন করতে পারার পাশাপাশি দর্শনার্থীরাও সতর্ক হয়ে যেতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভারপ্রাপ্ত এই ডেপুটি কিউরেটর।