ছিনতাইকালে খুন: পেশা ও বেশ বদলের পরও ধরা

ছিনতাই করতে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর ধরা পড়ার ভয়ে পেশা ও বেশভূষায় পরিবর্তন এনে এক চিকিৎসকের গাড়িচালকের কাজ নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি মো. পারভেজের।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2017, 03:23 PM
Updated : 6 July 2017, 03:23 PM

পারভেজের (২১) সঙ্গে মো. মেহেরাজ (২২) নামে আরও এক যুবককে বুধবার গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গত বছরের একটি খুনের আদ্যোপান্ত বেরিয়ে আসে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এরা দুজন বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত বছরের নভেম্বরে নগরীর কদমতলী ফ্লাইওভারে ছিনতাইকারীদের ছুরির আঘাতে নিহত হন এক যুবক। ওই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পারভেজ ও মেহরাজের জড়িত থাকার তথ্য পায় পুলিশ।

এদের মধ্যে পারভেজ আকবর শাহ থানার বিশ্বব্যাংক কলোনি এবং মেহেরাজ কোতোয়ালি থানার সিআরবি বয়লার কলোনি এলাকার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত বছরের ২৫ নভেম্বর কদমতলী ফ্লাইওভারে মো. রহিম (১৯) ও সাদ্দাম হোসেন (২১) ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। সেখানে ছিনতাইকারীদের ছুরির আঘাতে খুন হন রহিম।

এ ঘটনায় রহিমের ভাই অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

রউফ বলেন, “প্রায় আট মাস তদন্ত করে বুধবার সন্ধ্যায় আন্দরকিল্লা থেকে পারভেজ এবং সিআরবি এলাকা থেকে মেহরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

এই হত্যাকাণ্ডে ইউসুফ নামে আরও এক যুবক জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে, যিনি সম্পর্কে মেহরাজের ভায়রা। তাকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান উপ-কমিশনার রউফ।

বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মো. নোমানের আদালতে পারভেজ এবং হাকিম হারুনর রশিদের আদালতে মেহেরাজ জবানবন্দি দেন।

পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, ফ্লাইওভারে রহিম ও সাদ্দামকে আটকান মোটর সাইকেল আরোহী পারভেজ, ইউসুফ ও মেহেরাজ। রহিম ও সাদ্দামের কাছ থেকে মোবাইল ফোন সেট কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তারা।

“সাদ্দাম মোবাইল সেট দিয়ে দিলেও রহিম তা না দিতে চাওয়ায় ইউসুফ তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পরে ছিনতাই করা মোবাইল ফোন দুটি রেয়াজউদ্দিন বাজারে আট হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন তারা।”

রউফ বলেন, “পারভেজ বলেছে- ছিনতাই করে চলে যাওয়ার সময় ভিকটিম দুজনের মধ্যে একজনের পা থেকে রক্ত ঝরতে দেখে মামলার ভয়ে সে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

“পুলিশের কাছ থেকে বাঁচতে সে পেশা পরিবর্তন করে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করে। দাড়ি রেখে চেহারায় কিছুটা পরিবর্তন এনে ওই ছবি দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্সও সংগ্রহ করে সে। পরে এক চিকিৎসকের ব্যক্তিগত গাড়ি চালানোর কাজ নেয় পারভেজ।”

মোটর সাইকেলটি ঘটনার দিন তারা ব্যবহার করেছিলেন, সেটি ভয়ে কিছুদিন পরই বিক্রি করে দেন বলে পারভেজ পুলিশকে জানান। 

রউফ জানান, পারভেজ, মেহরাজ ও ইউসুফ পেশাদার ছিনতাইকারী। নগরীর বিভিন্ন স্থানে মোটর সাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে তারা সাধারণ মানুষের অর্থ ও মালামাল ছিনিয়ে নেয়।