মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওই সভায় যথাযথ ভূতাত্ত্বিক জরিপ নির্ভর ‘পাহাড় ব্যবস্থাপনা’ গড়ে তোলার কথাও বলেছেন আলোচকরা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “চট্টগ্রাম নগরীতে ২০০৭ সালের ভয়াবহ পাহাড় ধস থেকে আমরা কোনো শিক্ষা নিইনি।”
পাহাড় ধস এখন আর শুধু স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্যোগ হিসেবে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা এখন সকলের দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তদারকি ছাড়া পাহাড় বাঁচানো সম্ভব হবে না।
“রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করে, তাহলে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস বন্ধ করা যাবে না। পাহাড় বাঁচাতে হলে এ কমিটিকে উপজেলা পর্যায়েও শাখা কমিটি গঠন করতে হবে।”
পাহাড় ধস রোধে পাহাড়গুলোতে যথাযথ ভূতাত্ত্বিক জরিপ চালানো জরুরি জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, “পাহাড় নিয়ে আমাদের কোনো ভূতাত্ত্বিক জরিপ নেই। আমরা পাহাড়গুলোর অভ্যন্তরীণ গঠন কাঠামো সম্পর্কে জানি না।”
পাহাড় ধসের কারণ চিহ্নিত করতে গঠিত জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহা বলেন, “আমরা পাহাড় ধসের কারণগুলো চিহ্নিত করে প্রাপ্ত সুপারিশের ভিত্তিতে ভবিষ্যতের করণীয় নির্ধারণ করব।
“সরেজমিনে পরিদর্শন, বিশেষজ্ঞ মতামত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে আমরা বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ প্রণয়ন করে দ্রুত তা সরকারে কাছে হস্তান্তর করব।”
সুপারিশ তৈরির ক্ষেত্রে ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম নগরীতে পাহাড় ধসের পর গঠিত কমিটির দেওয়া ৩৬টি সুপারিশও বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে জানান সত্যব্রত সাহা।
অন্যদের মধ্যে ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ও কমিটির সদস্য সচিব অর্ধেন্দু শেখর রয়, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সৈয়দা সরওয়ার জাহান এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে কমিটির ২৭ সদস্য রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখতে যান।
সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে কয়েক দিনের ভারি বর্ষণের পর গত ১৩ জুন পাহাড় ধসে রাঙ্গামাটিতে ১২০ জন এবং চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ২৭ জনসহ দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পরপরই ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক মন্ত্রণালয় পাহাড় ধসের কারণ চিহ্নিত করতে ২৭ সদস্যের ‘জাতীয় কমিটি’ গঠন করা হয়।