মহেশখালের বাঁধ সরানোর প্রস্তুতি

বর্ষা আসার আগেই চলতি মৌসুমের বর্ষণে বেশ কয়েকবার প্লাবিত হওয়ার পর চট্টগ্রাম নগরী থেকে বৃষ্টির পানি নামার অন্যতম বড় পথ মহেশখালের বন্দর রিপাবলিক ক্লাব সংলগ্ন অংশে দেওয়া বাঁধটি অপসারণের কাজ মঙ্গলবারই শুরু হতে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2017, 07:31 AM
Updated : 13 June 2017, 07:40 AM

বিকাল ৩টার দিকে বাঁধটি অপসারণের কাজ শুরু হবে বলে মঙ্গলবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

তিনি বলেন, “আজকে বন্দর ও সিটি করপোরেশন যৌথভাবে বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু করবে।

“বিকাল ৩টার দিকে জোয়ার শেষ হবে। তারপরই অপসারণ কাজ শুরু করা হবে। এটি অত্যন্ত সর্তকতার সাথে করতে হবে, তাই সময়ের বিষয়টি দেখা হচ্ছে””

বাঁধ অপসারণে নৌপরিবহন মন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া গেছে জানিয়ে মেয়র নাছির বলেন, “একটু আগেই বন্দর চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছেন মন্ত্রীর লিখিত অনুমোদন পাওয়া গেছে।”

এর আগে সোমবার জলাবদ্ধ আগ্রাবাদ এক্সেস সড়ক পরিদর্শনে গিয়ে সিটি মেয়র নাছির জানিয়েছিলেন বাঁধ অপসারণে মন্ত্রীর মৌখিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। মন্ত্রীর লিখিত অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।

এদিকে রোববার বিকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে মহেশখালের বাঁধের আশেপাশের আগ্রাবাদ-হালিশহরের অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

সোমবার জলাবদ্ধ এলাকার তুলনায় মঙ্গলবার জলাবদ্ধ এলাকা আরও বেড়েছে। কিছু এলাকায় বেড়েছে পানির উচ্চতাও।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই মহেশখালের বাঁধের আশেপাশে শতাধিক মানুষ জড়ো হয়।

এর মধ্যেই সকাল থেকে সিটি করপোরেশনের একটি বড় স্কেভেটর ও কয়েকটি যন্ত্র বাঁধের কাছে জড়ো করা হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

মহেশখালের বন্দর রিপাবলিক ক্লাব সংলগ্ন অংশে ২০১৫ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রামের নগর পরিকল্পনাবিদদের বিরোধিতা উপেক্ষা করেই বাঁধটি নির্মাণ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এই পথ দিয়ে বৃষ্টির পানি কর্নফুলী নদীতে নেমে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ায় প্রতি বর্ষায় বেশ কয়েকবার তলিয়ে প্রায় পুরো চট্টগ্রাম নগরীর বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

বাঁধ নির্মাণের পর থেকেই এর উজানের ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ, ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা, ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর এবং ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরের বাসিন্দারা এর বিরোধিতা করে আসছেন।

এরপর বাঁধ অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

গত বছরের ২১ মে বাঁধ খুলে দিতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর সেখানে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়।

গত ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরার পর শুরু হওয়া বৃষ্টির প্রভাবে বাঁধের উজান ও ভাটির দুইপাশের মানুষই তিন দিন জলাবদ্ধ ছিল। সেসময় বাঁধ অপসারণের দাবি আরও জোরালো হলে ১ জুন নগর ভবনের এক বৈঠকে বাঁধটি অপসারণের ঘোষণা দেন মেয়র নাছির।

সেই ঘোষণার পর সোমবার থেকে আবার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে মহেশখালের বাঁধ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা ও ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করেন নগরবাসী।

এরপরই সোমবার রাতে বাঁধটি অপসারণের বিষয়টি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়।