জলাবদ্ধতা: মহেশখালের বাঁধটি নিয়ে প্রশ্ন আ. লীগ নেতার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের জনপ্রিয়তা কমিয়ে সাধারণ মানুষকে ‘বিক্ষোভে উসকে দেওয়ার’ উদ্দেশ্য থেকে চট্টগ্রামের মহেশখালের বাঁধটি অপসারণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। 

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2017, 06:23 PM
Updated : 12 June 2017, 06:23 PM

চট্টগ্রাম নগরীর বড় একটি অংশের জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত মহেশখালের ওপর দেওয়া এই বাঁধটি অপসারণের দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সুজন সোমবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা ‘সরকার বিরোধী ক্রীড়ানকদের’ ভূমিকাই মহেশখালের বাঁধ অপসারণের প্রধান অন্তরায়।

“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস করা এবং জনমনে বিক্ষোভ সৃষ্টি করাই তাদের মূল লক্ষ্য। আশ্বাস দেওয়ার পরও মহেশখালের বাঁধ অপসারণে দীর্ঘসূত্রিতা জনমনে গভীর ক্ষোভের সঞ্চার করছে।”

নিম্নচাপের কারণে রোববার বিকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে সোমবার সকালেই তলিয়ে যায় নগরীর আগ্রাবাদ ও হালিশহর এলাকা।

এছাড়া নগরীর চান্দগাঁও, জিইসি মোড়, বাকলিয়া চকবাজার, বাদুরতলা, হালিশহর, কাতালগঞ্জ ও ষোলশহর দুই নম্বর গেইটসহ বিভিন্ন এলাকায় গোড়ালি থেকে হাঁটু পানি জমে।

আগ্রাবাদ-হালিশহর এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরির অন্যতম কারণ মহেশখালের বাঁধ।

মহেশখালের এই বাঁধটির অপসারণকাজ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে লুকিয়ে থাকা ‘সরকার বিরোধী একটি চক্র’ আটকে দিয়েছে অভিযোগ করে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা সুজন।   

সোমবার দুপুরে আগ্রাবাদ এক্সেস সড়কে জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শনের সময় মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “বন্দর চেয়ারম্যানের সাথে এখানে আসার আগে ফোনে কথা হয়েছে। বন্দরের বোর্ড সভায় বাঁধ অপসারণের বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

“কিন্তু এটি করতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। মন্ত্রীর সাথে আমার ফোনে কথা হয়েছে। তিনি মৌখিক সম্মতি দিয়েছেন। লিখিত দিতে যেটুকু সময় লাগে। তারপর কাজ শুরু হবে।”

মেয়র সেখানে আসার আগে স্থানীয়রাও জলাবদ্ধতার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে মহেশখালের বাঁধকে দায়ী করেন।

এর আগে গত ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরা’র কারণে সৃষ্ট তিনদিন স্থায়ী জলাবদ্ধতার জন্যও এলাকার বাসিন্দা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা ওই বাঁধকেই দায়ী করেছিলেন।

এরপর পহেলা জুন নগর ভবনে এক সভা শেষে মেয়র নাছির ওই বাঁধটি দ্রুত অপসারণের ঘোষণা দেন।

বিবৃতিতে সুজন বলেন, “দুই বছর আগে বাঁধটি দেওয়ার সময়ই এর কুফল সম্পর্কে অবগত হয়ে বিরোধিতা করেছিলাম। বাঁধের কারণে বৃষ্টির সময় উজানের এবং জোয়ারের সময় ভাটির অধিবাসীরা পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

“কিন্তু জনমত সম্পূর্ণ উপক্ষো করে রাষ্ট্রের কোটি টাকা অপচয় করে ওই বাঁধ নির্মাণ হয়। ফলে স্রোতস্বিনী মহেশখাল পলি জমে আজ ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। অনেক অংশে এখন হেঁটেই পার হওয়া যায়।”