এক দশকে চট্টগ্রামের সব পাহাড় ‘নিশ্চিহ্নের’ আশঙ্কা

বর্তমান গতিতে পাহাড় দখল চললে এক দশকের মধ্যে চট্টগ্রামের সব পাহাড় ‘নিশ্চিহ্ন’ হওয়ার শঙ্কা জানিয়ে এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলনকারীরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2017, 05:03 PM
Updated : 11 June 2017, 05:04 PM

২০০৭ সালের ১১ জুন নগরী ও আশপাশের এলাকায় পাহাড় ধসে ১২৭ জনের মৃত্যুর দশক পূর্তির কর্মসূচিতে এই দাবি জানান তারা।

রোববার বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিহতদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্বালন করে পরিবেশবাদী সংগঠন পিপলস ভয়েস, কারিতাস চট্টগ্রাম অঞ্চল ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)।

কর্মসূচি থেকে ১১ জুনকে ‘জাতীয় পাহাড় রক্ষা দিবস’ ঘোষণার দাবি জানায় সংগঠন তিনটি।

প্রদীপ প্রজ্বালনের পর অনুষ্ঠিত সভায় পরিবেশ আন্দোলনের সংগঠক শরীফ চৌহান বলেন, “পাহাড় কাটা ও দখলে জড়িতরা চিহ্নিত হলেও প্রশাসন কখনোই তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দখলকারীরা তাদের অবস্থানে অক্ষতই আছে।

“শুধু বর্ষা এলেই যে পাহাড়টি ধসে সেখান থেকে কয়েকজন বসতকারীকে সরানো হয়। অথচ প্রতি বছরই নির্বিচারে নতুন পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন চলছে।”

এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে পাহাড় ধ্বংসের সতর্কবার্তা দিয়ে শরীফ চৌহান বলেন, “তখন আর পাহাড় রক্ষার দাবিও জানাতে হবে না। সব পাহাড় শেষ হওয়ার আগেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

এভাবে চলতে থাকলে ২০০৭ সালের মতো যে কোনো দিন আবার পাহাড় ধসে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় হতে পারে বলেও শঙ্কা চৌহানের।

পরিবেশ আন্দোলন কর্মী অধ্যাপক ইদ্রিস আলী বলেন, প্রতি বছর বর্ষা এলেই শুধু প্রশাসনের তোড়জোড় শুরু হয়।

“ঝুঁকিপূর্ণ বসতি চিহ্নিত করা ও তাদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদের সুপারিশগুলো এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। দখল হওয়া পাহাড়গুলোর অধিকাংশের মালিক সরকারি সংস্থা। অথচ তাদেরই কোনো নড়চড় নেই।”

বছরে ১১ মাস পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন আর এক মাস উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কোনো ফল আসবে না বলে জানান ইদ্রিস আলী।

“শুধু বর্ষা এলেই লোক দেখানো অভিযান না চালিয়ে সারা বছর পাহাড় রক্ষার অভিযান চালাতে হবে।”

সংস্কৃতিকর্মী রাশেদ হাসান বলেন, “পাহাড়ের পাদদেশে যারা বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন তাদের অধিকাংশই শ্রমজীবী মানুষ। তাই শুধু উচ্ছেদ নয়, তাদের স্থায়ী পুনর্বাসনেও রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে।”

সংস্কৃতিকর্মী সুনীল ধর, কারিতাস চট্টগ্রামের শ্যামল মজুমদার, এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের এস এম এরশাদুল করিম, অধিকার কর্মী মাজেদা বেগম শিরু, যুবনেতা উজ্জ্বল শিকদার, সুব্রত ধর মিঠু, ছাত্রনেতা প্রকাশ শিকদার, সম্পদ রায়, সাইফুদ্দিন সুজন ও পরিবেশ ছাত্র ফোরামের আরিফুল হক সভায় বক্তব্য দেন।