চট্টগ্রাম দক্ষিণ বিএনপির সভাও মারামারিতে পণ্ড

চট্টগ্রাম উত্তর জেলার পর দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভায়ও মারামারি হয়েছে দুই পক্ষে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2017, 01:16 PM
Updated : 3 May 2017, 03:40 PM

বুধবার পটিয়া উপজেলার ইন্দ্রপুলে একটি কমিউনিটি সেন্টারে ডাকা এই কর্মীসভা মারামারির কারণে পণ্ড হয়ে যায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এই সভায় উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সংঘর্ষের কারণে তিনি যেতে পারেননি।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরীতেও উত্তর জেলা বিএনপির কর্মী সভা দুই পক্ষের সংঘর্ষের কারণে তড়িঘড়ি করে শেষ করতে হয়েছিল প্রতিনিধিদের বক্তব্য ছাড়াই। ওই সভায়ও ছিলেন খন্দকার মোশাররফ।

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলকে চাঙা করতে জেলায় জেলা কর্মী-প্রতিনিধি সভা করছে বিএনপি, এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভা ডাকা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ৩টা থেকে কর্মীসভা শুরুর কথা থাকলেও দুপুর থেকে বিভিন্ন উপজেলা থেকে কর্মীরা জড়ো হতে থাকে হল টু ডে নামে ওই কমিউনিটি সেন্টারে।

কোনো নেতার নামে স্লোগান দেওয়া নিষেধ থাকলেও দক্ষিণ জেলার সহ-সভাপতি এনামুল হক এনামের সমর্থকরা স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ঢোকার পরই মারামারির সূত্রপাত বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, “এসময় দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান জুয়েলের অনুসারীরা স্লোগান বন্ধ করতে বললে দুইপক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এনাম অনুসারীরা রাস্তায় বের হয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে।”  

পটিয়া থানার ওসি নেয়ামত উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কর্মীসভাকে কেন্দ্র করে কমিউনিটি সেন্টারে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। পরে এক পক্ষ রাস্তায় এসে অবস্থান নেন।

এসময় তারা ১০ থেকে ১৫টি যানবাহন ভাংচুর করে বলে জানান ওসি।

ব্যানারসহ মিছিল নিয়ে এভাবে কর্মীসভায় এসেছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা; কিন্তু মারামারির পর সেই সভা পণ্ড হয়ে যায়

সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন বলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

আহতদের মধ্যে দক্ষিণ জেলা সহসভাপতি এনামুল হকও রয়েছেন। তাকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

আহত মো. এরশাদ (২১), তারেকুল ইসলাম (৩০), আহমদ নবী (২০), মো. ইয়াছিন (৩৭), মো. মানিক (২১), নুর আলম (৩২) ও মো. জাহাঙ্গীর (৩২) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে চমেক পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক গৌরি লাল চাকমা।

মারামারির পর খন্দকার মোশাররফ সভায় যেতে পারেননি। পরে বিকালে তিনি চিটাগাং ক্লাবে দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন বলে বিএনপি নেতারা জানান।

সংঘর্ষের বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাকসুর সাবেক এজিএস মাহবুবুর রহমান শামীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। এ ঘটনা কারা ঘটিয়েছে, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি।”

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েলের কাউকে তাদের মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে উত্তর জেলা বিএনপির কর্মীসভায় হাতাহাতি ও চেয়ার ছোড়াছুড়ির পর কোনো রকমে সভা শেষ হয়েছিল।

তবে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভা পুরোপুরি পণ্ড হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার বিকালে নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কর্মীসভা হওয়ার কথা রয়েছে।