মৎস্য কর্মকর্তা এবার ডিমের পরিমাণ আশাব্যঞ্জক বললেও তা কম বলেছেন এক গবেষক।
শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত চট্টগ্রামের হালদা নদীর রাউজান ও হাটহাজারী অংশের নাপিতের ঘোনা, রাম দাশ মুন্সীর হাট, বাড়ি ঘোনা, খলিফার ঘোনাসহ কয়েকটি স্থানে ডিম দিতে শুরু করে মিঠা পানির কার্প জাতীয় মা মাছগুলো।
ডিম ছাড়ার পরপরই হালদা পাড়ে নৌকা নিয়ে অপেক্ষমান জেলেরা সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
মা মাছেরা ডিম দিলেও সংগ্রহ অন্যান্যবারের তুলনায় অনেক কম বলে মনে করছেন নদী বিশেষজ্ঞ ও মৎস্য কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মমিনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে সামান্য ডিম দিলেও গভীর রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত মা মাছ হালদায় ডিম ছেড়েছে।
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, গভীর রাত একটা থেকে ডিম দেয়া শুরু করে মা জাতীয় মাছ। শনিবার ভোর পর্যন্ত জেলেরা ডিম সংগ্রহ করেছে।
তিনি বলেন, অমাবস্যা বা পূর্ণিমা না হলেও বজ্রবৃষ্টিসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক নিয়ামক (প্যারামিটার) ঠিক থাকায় মা মাছ ডিম দিয়েছে।
তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় ডিম সংগ্রহ অনেক কম হয়েছে বলে দাবি তার।
মনজুরুল কিবরিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অন্যান্য বছরে যেখানে হালদা নদী জুড়ে তিনশর অধিক নৌকা নিয়ে জেলেরা ডিম সংগ্রহের উৎসবে মেতে উঠত সেখানে এবারে ১০৫টি নৌকায় করে ডিম সংগ্রহ হয়েছে।
তিনি বলেন, এবারে প্রতিটি নৌকা পানি-ডিম মিলিয়ে ১৬ কেজির মতো ডিম সংগ্রহ করেছে। সে হিসেবে ডিম সংগ্রহের পরিমাণ ১৬৮০ কেজি। সেখান থেকে ২৮ কেজির মতো রেণু সংগ্রহ করা যাবে।
“এ পরিমাণ রেণু অন্যান্য বারে দেওয়া ডিমের তুলনায় অনেক কম,” বলেন মনজুরুল কিবরিয়া।
তিনি বলেন, ডিম সংগ্রহের রেণু তৈরি করা পর্যন্ত জেলেদের যে খরচ পড়ছে সংগ্রহের সাথে তার হিসাব না মেলায় প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদায় ডিম সংগ্রহকারী জেলের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলাজুড়ে আছে হালদা নদী। চোরা শিকারির তৎপরতায় নদীতে মা মাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় প্রতিবছরই হালদায় ডিম উৎপাদনের পরিমাণ কমছে।
সরকারি হিসাবে, ২০১২ সালে নদী থেকে সংগৃহীত ডিমে রেণু হয়েছিল প্রায় এক হাজার ছয়শ কেজি। ২০১৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৬২৪ কেজি এবং ২০১৪ সালে আরও কমে তা হয় মাত্র পাঁচশ কেজি।