ইয়াবা পাচার বন্ধে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা সত্ত্বেও দেশটি থেকে ইয়াবা পাচার বন্ধে সফলতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তারপরও আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2017, 11:22 AM
Updated : 16 April 2017, 03:17 PM

রোববার চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে আইন শৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

ইয়াবাসহ কোনো মদক বাংলাদেশে তৈরি হয় না দাবি করে মন্ত্রী বলেন, “ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে ফেন্সিডিল আসে। সেটা অনেক কমে গিয়েছে। ভারত সরকার আমাদের সহযোগিতা করেছে। মিয়ানমার সরকারের সাথে কথা বলার পরও ইয়াবা বন্ধে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও কথা বলে যাচ্ছি।

সভায় মাদক ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ের জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি, যানজটসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন জনপ্রতিনিধি ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

রোববার ভোরে বঙ্গোপসাগরে একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ২০ লাখ ইয়াবাসহ নয়জনকে আটক করেছে র‌্যাব।

এর আগে গত বছরের ১৭ জানুয়ারি একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছিল র‌্যাব।

র‌্যাবের দাবি, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের একটি সংঘবদ্ধ চক্র মাছের ব্যবসার আড়ালে ট্রলারে করে ইয়াবা নিয়ে চট্টগ্রামের উপকূলে আসে।

এর আগে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে একটি ট্রলার থেকে ১৫ লাখ ইয়াবা  উদ্ধার করে নৌবাহিনী। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকার পথে বিভিন্ন স্থানে ধরা পড়েছে ইয়াবার বেশ কয়েকটি বড় চালান।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইয়াবা পাচার রোধে যোগাযোগ করে যাচ্ছে বলে জানান অঅসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তিনি বলেন, “আমাদের কাছে তথ্য আসে সীমান্ত পার হয়ে টেকনাফে প্রতিটি ইয়াবা বিক্রি হয় ৫০-৬০ টাকায়। কক্সবাজার আসলে তা দেড়শ টাকা হয়ে যায়। চট্টগ্রাম আসলে ২৫০ টাকা এবং ঢাকায় গেলে ৫০০-৬০০ টাকা হয়ে যায়।

“সাপ্লাই ও ডিমান্ডের ওপর ভিত্তি করে আবার দামও বেড়ে যায়।”

জঙ্গিবাদকে বৈশ্বিক সমস্যা মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ইসলাম ধর্মকে জঙ্গি ধর্ম করার জন্য চক্রান্ত চলছে।

“আজকে বিশ্বে কথা হচ্ছে ‘অল হিউম্যান আর নট টেরোরিস্ট, বাট অল টেরোরিস্ট আর মুসলিম। সে জায়গাটিতে নেওয়ার জন্য এ ঘটনাগুলো ঘটছে।”

বাংলাদেশে যারা জঙ্গি তৎপরাতা চালাচ্ছে তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে তিনি বলেন, “তারা সবাই দেশিয় জঙ্গি। যেগুলো সবসময় ঘাপটি মেরে থাকে। সুযোগ পেলেই উপরে উঠে। এরা বাইরে থেকে আসে না, বাইরে থেকে এসে এখানে কাজ করে না।”

পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে বলে আইনশৃঙ্খলা ‘যথেষ্ট পরিমাণ’ ভালো। পুলিশ এখন আগের চেয়ে অনেক দক্ষ।

সভায় উপস্থিত র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন বিভিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কথা উল্লেখ করে বলেন, “কোনোজঙ্গি আস্তানায় অভিযানে গেলে ঢাকা থেকে টিম আসতে আসতে তারা মোবাইল, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পুড়িয়ে ফেলে।”

দ্রুত সময়ে জঙ্গি আস্তানায় প্রবেশের জন্য সোয়াটের মতো র‌্যাব-পুলিশকেও ‘বুলেটপ্রুফ সিল’ দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ১৪ আসনের (চন্দনাইশ উপজেলা) সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, বিভিন্ন উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা, নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. শাহাবউদ্দিন, মহানগর কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমেদ, চট্টগ্রাম জেলা পিপি সিরাজুল ইসলাম।