বন্দরনগরীর ‘স্যানিটেশন মাস্টার প্ল্যান’ বাস্তবায়নের তাগিদ

চট্টগ্রাম ওয়াসার ‘ড্রেনেজ ও স্যানিটেশন’ মাস্টার প্ল্যানের খসড়া প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2017, 03:19 PM
Updated : 1 April 2017, 04:00 PM

শনিবার চট্টগ্রামের হোটেল পেনিনসুলায় ‘ডেসিমেশন ওয়ার্কশপ অন স্যানিটেশন অ্যান্ড ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ তাগিদ দেওয়া হয়।  

অনুষ্ঠানে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন পরামর্শক দলের অধিনায়ক জন চার্লটন।

এতে প্রধান অতিথি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‍“বিগত দিনে না পারলেও (মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন), এবারও যে পারা যাবে না তা নয়। এর জন্য প্রয়োজন আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা।”

তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম শহরের মতো জায়গায় স্যানিটেশন সিস্টেম নেই। ড্রেনেজ সিস্টেমও যুগোপযোগী না হওয়ায় সমস্যা দিনের পর দিন বেড়ে অসহনীয় হয়ে যাচ্ছে। আর সময়ক্ষেপণ না করে ড্রেনেজ সিস্টেম বাস্তবায়ন করা জনগণের জন্য মঙ্গলজনক হবে।”

মেয়র বলেন, সিডিএ ১৯৯৫ সালে মাস্টার প্ল্যান করলেও কারা তা বাস্তবায়ন করবে সুর্নিদিষ্ট করেনি। এজন্য কোনো প্রতিষ্ঠান কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

স্যানিটেশন বিষয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ওই মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন না হলেও নতুন করে আরেকটি মাস্টার প্ল্যানের খসড়া করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা।

এই মাস্টার প্ল্যান দ্রুত তৈরি করার তাগিদ দিয়ে নাছির বলেন, “মাস্টার প্ল্যানটি তৈরি হলে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। সেখানে অনুমোদন হলে ডিপিপি তৈরি করতে হবে।”

ডিপিপি বাস্তায়ন করে একনেকের অনুমোদন নিতে সময়ের প্রয়োজন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “এরপর আসবে অর্থায়নের বিষয়। এসব মিলিয়ে কয়েক বছর সময় লেগে যাবে।

“এজন্য যত দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি তৈরি করা যায়, তা মঙ্গলজনক হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, “প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য জাইকা, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টাকা দিতে আগ্রহী। যাদের ইন্টারেস্ট কম, তাদের আমরা প্রেফার করব।”

তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে জাইকা ও বিশ্বব্যাংককে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন ওয়াসা ব্যবস্থাপক।

ফজলুল্লাহ জানান, এ প্রকল্পে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ড্রেনেজ ও ওয়াসা স্যুয়ারেজ অংশের কাজ করবে।

অনুষ্ঠানে এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ‘সেনিটেশন ও ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা। পাশাপাশি জনগণের জীবন মানের উন্নয়ন করা।

প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ব্যয়ে এ মাস্টার প্ল্যানটির কাজ হবে দুই স্তরে। প্রথম স্তরের প্রকল্প সময় ধরা হয়েছে ২০২৩ সাল এবং পরের স্তরটি ২০৩০ সাল পর্যন্ত।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য রফিকুল আলম, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন হযরত আলী।

চুয়েট উপাচার্য রফিকুল আলম বলেন, পরিকল্পনা ছাড়া কোনো শহর ভালো ভাবে চলতে পারে না। যেকোনো প্রকল্প সিডিএ, গ্যাস, পিডিবি সম্মিলিতভাবে করার ওপর জোর দেন তিনি।

সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে প্রকল্পটির বিষয়ে মতামত গ্রহণে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানান চুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন হযরত আলী।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সিডিএ-র সাবেক প্রধান প্রকৌশলী জিয়া হোসাইন, পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আনোয়ার, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট এবং চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. হারুণ বক্তব্য রাখেন।