সীতাকুণ্ডের আস্তানায় এক কক্ষে মিলল ১৫টি বোমা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর এলাকার প্রেমতলায় ‘ছায়ানীড়’ ভবনের জঙ্গি আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কয়েকটি শক্তিশালী বোমাসহ ছোট-বড় ১৫টি বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2017, 11:11 AM
Updated : 18 March 2017, 11:37 AM

এছাড়া ওই বাসায় ছয়টি কন্টেইনার ভর্তি তরল পদার্থ পাওয়া গেছে। এগুলো এসিড বলে ধারণা করছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা দুপুরে ‘ছায়ানীড়’ এর নিচ তলায় জঙ্গিদের ভাড়া নেওয়া ওই বাসায় তল্লাশি শুরু করে।

চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন পর্যন্ত একটি কক্ষে তল্লাশি শেষ হয়েছে। ওই কক্ষে ১৫টির মতো ছোট-বড় বোমা এবং কিছু সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। আরও দুটি কক্ষ তল্লাশি শেষে বিস্তারিত জানাতে পারব।”

উদ্ধার করা বোমার মধ্যে একটি পৌনে ২টার দিকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নষ্ট করা হয় জানিয়ে সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউর রহমান বলেন, এটিও বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা বোমাগুলোর মতোই শক্তিশালী।  

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (সদর) হাবিবুর রহমান জানান, তল্লাশির শুরুতে প্রথম কক্ষ থেকে ছয়টি কন্টেইনারে থাকা তরল পদার্থ উদ্ধার হয়। এগুলো এসিড কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সারাদিন ওই বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ১০টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নষ্ট করে পুলিশ। এরমধ্যে চারটি ছিল সুইসাইড ভেস্ট।

এদিকে শনিবার সকাল থেকে জঙ্গি দম্পতি জসিম ও আর্জিনাকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।

সীতাকুণ্ডের নামার বাজারে ‘সাধন কুঠির’ ভবনের বাসা থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তারের ঘটনায় সন্ত্রাস বিরোধী ও অস্ত্র আইনের দুই মামলায় ওই দুজনকে শুক্রবার রাতে ১২ দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেওয়া একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সাধন কুটিরের ওই বাসায় অভিযান চালানোর আগেই সেখান থেকে রাশেদ ও হৃদয় নামে দুজন পালিয়ে যান।

বুধবার বিকালে সাধন কুটির থেকে জসিম ও আর্জিনাকে ধরার পর তাদের দেওয়া তথ্যে পাশের প্রেমতলা এলাকার বাড়ি ছায়ানীড় ঘিরে অভিযানে যায় পুলিশ।

রাতভর ঘিরে রাখার পর বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযানে নামে সোয়াট। অভিযানের সময় গুলি এবং জঙ্গিদের ঘটানো বিস্ফোরণে এক শিশুসহ পাঁচজন নিহত হন।

পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত সুপার রেজাউল মাসুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘ছায়ানীড়’ এ নিহত পাঁচজনের মধ্যে দুজনের ‘প্রাথমিক পরিচয়’ তারা পেয়েছেন। এরা হলেন কামালউদ্দিন ও তার স্ত্রী জোবাঈদা। তাদের বাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে।

ওই দুজন জসিম ও তার স্ত্রীর আত্মীয় জানিয়ে রেজাউল মাসুদ বলেন, “এসবই প্রাথমিক তথ্য। আমরা এগুলো খতিয়ে দেখছি।” 

এর আগে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম বলেছিলেন, নিহত জঙ্গিদের মধ্যে দুজন জসিমের আপন বোন ও বোনজামাই হতে পারে। অন্য দুজন ঢাকার মিরপুর থেকে নিখোঁজ দুই খালাত ভাই হতে পারে।