চট্টগ্রামের নৌ ঘাঁটিতে বোমা: জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ

চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির মসজিদে বোমা হামলার ঘটনায় করা মামলায় পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে এক জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2017, 12:39 PM
Updated : 30 Oct 2017, 06:57 AM

চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম নাজমুল হোসেন চৌধুরী বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আদেশে জঙ্গি সংগঠন জেএমবি সদস্য আবদুল গাফফারকে সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে বলা হয়।

গাফফার অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ইতোমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি রাজধানীর বাড্ডা, শেরেবাংলা নগর ও ওয়ারী থানার তিনটি মামলার আসামি।

গত ১৫ জানুয়ারি তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদালতে আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার পরিদর্শক জাবেদ মাহমুদ।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুনানি শেষে আদালত গাফফারকে ইপিজেড থানার ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে (শ্যোন অ্যারেস্ট) নির্দেশ দিয়েছে।

“পাশাপাশি এ মামলায় তার বিরুদ্ধে কোর্ট ওয়ারেন্টও ইস্যু করেছেন আদালত।”

মামলার আইও পরিদর্শক জাবেদ মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলার আসামি আগে গ্রেপ্তার আবদুল মান্নানের বড় ভাই আবদুল গাফফার। আবদুল মান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় গাফফারের সম্পৃক্ততার বিষয়টি জানা যায়।

“তাই আমরা তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিলাম। আদালতের এ নির্দেশের পর গাফফারকে রিমাণ্ডে চাওয়া হবে।”

২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পরে ১০ মিনিটের ব্যবধানে ঘাঁটির ভেতরের দুটি মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।

ওই মসজিদগুলোতে শুক্রবার স্থানীয়রাও নামাজ পড়তে আসতেন, বিস্ফোরণে সামরিক-বেসামরিক মিলিয়ে ২৪ জন আহত হন।

বোমা হামলার নয় মাস পর গত ৩ সেপ্টেম্বর নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমান্ডার এম আবু সাঈদ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে নগরীর ইপিজেড থানায় একটি মামলা করেন।

মামলায় নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, বলকিপার আবদুল মান্নান, রমজান আলী ও বাবুল রহমান ওরফে রনিকে আসামি করা হয়।

দুই আসামি আবদুল মান্নান ও রমজান আলী গ্রেপ্তার হয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। ইতোমধ্যে এই দুজনকে চার দফায় রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

ওই মামলার বাদী নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমাণ্ডার এম আবু সাঈদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদেই আবদুল মান্নান তার ভাই গাফফারের জড়িত থাকার বিষয়ে জানিয়েছিল।

“গাফফারকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না তা হয়ত জানা যাবে।”

জেএমবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক রাইসুল ইসলাম খান নোমান ওরফে নাফিস ওরফে ফারদিনের নেতৃত্বেই নৌ ঘাঁটির মসজিদে ওই আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয় বলে মামলার এজাহারে বলা হয়।

ফারদিন গত বছরের ৩ এপ্রিল বগুড়ার শেরপুরে গ্রেনেড বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে নিহত হন বলে পুলিশ জানায়। এ কারণে তার নাম এ মামলার আসামি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে নৌঘাঁটিতে হামলার ৯ দিন পর ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজারে ফারদিনের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে সেনা পোশাক, র‌্যাংক ব্যাজসহ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

এ মামলার অন্য দুই আসামি নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন এবং বাবুল রহমান ওরফে রনি এখনও পলাতক।