পুরনো নিয়মে সিসিসির হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের দাবি

পুরনো নিয়মে স্থাপনার বর্গফুট অনুযায়ী হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের দাবি জানিয়েছে ‘চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2017, 10:18 AM
Updated : 12 Jan 2017, 10:18 AM

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে সিদ্ধান্ত ঠিক করতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে এক মাস সময় বেঁধে দিয়েছে তারা।

এ সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন, অনশন, গণসমাবেশ, বিক্ষোভ, হরতালসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

গত বছরের ২১ মার্চ আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সিটি করপোরেশনের ‘পঞ্চবার্ষিকী কর মূল্যায়ন কর্মসূচি’ উদ্বোধন করে সিটি মেয়র নাছির ‘হোল্ডিং ট্যাক্স’ আদায়ে ‘জিরো টলারেন্স’ থাকবে বলে জানিয়েছিলেন।

ওই অনুষ্ঠানেই করপোরেশনের কর্মকর্তারা ১৯৮৬ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী বর্গফুটের পরিবর্তে স্থাপনার ভাড়ার ভিত্তিতে কর আদায়ের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

গত কয়েকমাস ধরে কর্মকর্তারা সে অনুযায়ী নতুন হারে ট্যাক্স নির্ধারণের কাজ শুরু হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

‘চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সদস্য সচিব মো. নুরুল আবছার বলেন, “১৯৮৬ সালের সরকারি অধ্যাদেশ তো সাবেক মেয়রদের সময়ও ছিল, নগরবাসীকে ভালোবেসেই উনারা এ প্রক্রিয়ায় কর নির্ধারণ থেকে বিরত ছিলেন। বর্তমান মেয়র যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন সেটাকে আমরা অন্যায়, অন্যায্য ও জুলুম মনে করছি।”

হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো নিয়ে গত বছরের মাঝামাঝি মেয়র নাছিরের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। মহিউদ্দিন ট্যাক্স পুনর্মূল্যায়নের বিরোধিতা করেছিলেন।

অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারের সময় হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও পুনর্মূল্যায়ন শুরুর সময় থেকে নাছির বলছেন- হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর এখতিয়ার সরকারের। তিনি কেবল মন্ত্রণালয়ের অধ্যাদেশ অনুসারে কর আদায়ের চেষ্টা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মেয়রের এই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস পপি।

তিনি বলেন, “মেয়র বলছেন এটা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় করছে, এতে উনার হাত নেই। তিনি যেহেতু নিজেকে নির্বাচিত মেয়র দাবি করেন, তাই জনগণের পক্ষে সরকারের সাথে দেন-দরবার করাও উনার দায়িত্ব।

“অথচ সে দায়িত্ব তিনি পালন করছেন না। এ পদ্ধতি চালু হলে বাড়ির মালিকদের ওপর চাপ পড়বে। তারা ঘর ভাড়াও বাড়িয়ে দেবেন।”

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ উল্লাহ বলেন, “বাড়ি মালিকদের পাশ কাটিয়ে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ট্যাক্স পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে। আগে ছিল এলাকাভেদে বর্গফুটপ্রতি তিন থেকে সর্বোচ্চ সাত টাকা। আর এখন ১৭ শতাংশ। এখনকার মেয়র সরকারি সিদ্ধান্ত মানার কথা বলছেন, তাহলে আগের মেয়ররা কিভাবে সরকারের নির্দেশ অমান্য করলেন?”

সাবেক কাউন্সিলর এম এ মালেক বলেন, রাজধানীতে এখনও ১৪ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স দেয় মানুষ। চট্টগ্রামে কেন ১৭ শতাংশ হবে?

পরিষদের সদস্য হাজী জাফর আহমদ বলেন, “করপোরেশনের আয়ের অনেক খাত আছে সেগুলো এখনও করের আওতার বাইরে। সেগুলোতে আগে কর ধার্য করুন।”

পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জহুরুল হক, নগর বাইশ মহল্লা কমিটির সভাপতি সারওয়ার আলম, মো. সিদ্দিকুল ইসলাম, মো. মুজিবুল হক, সিরাজুল ইসলাম, কামাল উদ্দিন ও নুর মোহাম্মদ খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।