এমএ আজিজের স্মরণসভায় এমপি-মন্ত্রীদের অনুপস্থিতিতে ক্ষোভ

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহযোগী প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এমএ আজিজের স্মরণ সভায় দলীয় এমপি-মন্ত্রীরা উপস্থিত না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের নেতারা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2017, 05:19 PM
Updated : 11 Jan 2017, 05:19 PM

বুধবার দুপুরে নগরীর উত্তর হালিশহরে এম এ আজিজের বাড়ি সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থান প্রাঙ্গনে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

এতে নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত থাকলেও দুই সংসদ সদস্য এম এ লতিফ ও আফসারুল আমীন এবং মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি উপস্থিত ছিলেন না।

এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে নগর কমিটির সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, এম এ আজিজ ও জহুর আহমদ চৌধুরীর মতো নেতাদের ত্যাগ ও শ্রমে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের হাতে প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ অনেককে মন্ত্রী-এমপি বানিয়েছে।

“উনাদের সম্মান দিলে আমরা সম্মান পাব। ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের সম্মান করতে শিখবে। কিন্তু আজ মন্ত্রী-এমপিরা কোথায়? তাদের এম এ আজিজের কবরে আসার সময় নেই। আমরা এসেছি, অথচ মন্ত্রী-এমপিরা কেউ এল না।”

এর আগে ৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অনুষ্ঠানেও দলের নিষ্ক্রিয় নেতাদের সমালোচনা করেছিলেন মহিউদ্দিন-নাছির ও সুজন।

বুধবারেরর সভায় নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “এম এ আজিজ ছয় দফাকে এক দফায় পরিণত করার প্রধান উদ্যোক্তা। তিনি বাঙালির আশা জাগানিয়া শক্তির প্রেরণা হয়ে থাকবেন।

“এম এ আজিজ ও জহুর আহমদ চৌধুরীর উপর বঙ্গবন্ধুর অগাধ আস্থা ছিল। এজন্য তিনি চট্টগ্রাম থেকে ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন।”

মহিউদ্দিন বলেন, যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন সবার উচিত এম এ আজিজ-জহুর আহমদ চৌধুরীকে জানা। অথচ কেউ কেউ দলের সভায় আসেন না। এম এ আজিজের মৃত্যুবার্ষিকীতে আসেন না।

নগর কমিটির আরেক সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা স্বপ্নদ্রষ্টা এম এ আজিজের মৃত্যু বার্ষিকীতে দলীয় এমপি-মন্ত্রীরা নেই, এটা দুঃখজনক। 

সভায় নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার অকুণ্ঠ সমর্থক ছিলেন এম এ আজিজ। তার মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালন করতে হবে। তার আদর্শকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।

১৯২১ সালের চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া এমএ আজিজ ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট রাজনৈতিক সহচর।

আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এমএ আজিজ ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। ভাষা আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন তিনি।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছয় দফা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন চট্টগ্রামের এই নেতা। ১৯৭০ এর নির্বাচনে নগরীর কোতোয়ালি-ডবলমুরিং আসন থেকে গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এমএ আজিজ।

পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়ে ১৯৫৪, ১৯৫৮ এবং ১৯৬৬ সালে তিনি কারাবরণ করেন। ১৯৭১ সালের ১১ জানুয়ারি মাত্র ৫০ বছর বয়সে মারা যান এম এ আজিজ।

বুধবারের সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাবেক গণপরিষদ সদস্য ইসহাক মিয়া।

উপস্থিত ছিলেন নগর কমিটির উপদেষ্টা শেখ মোহাম্মদ ইসহাক, সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিকুল ইসলাম ফারুক, মশিউর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসেন, জহুর আহাম্মদ, আবদুল আহাদ, যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদসহ অন্যরা।