প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের সাক্ষাৎ

চট্টগ্রাম ও সিলেটে সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়ায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে হাই কোর্ট সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদ, চট্টগ্রাম।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2016, 12:36 PM
Updated : 21 Dec 2016, 12:38 PM

বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেন বাস্তবায়ন পরিষদের নেতারা।

পরিষদের আহ্বায়ক সাবেক পিপি আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চট্টগ্রাম ও সিলেটে সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়ায় পরিষদের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে।

“আমরা প্রধান বিচারপতিকে বলেছি- আপনার পক্ষেই সংবিধানের ১০০ ধারা বাস্তবায়ন সম্ভব। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেছেন- আমি চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক, আমিও আন্তরিক।”

গত ১ ডিসেম্বর রাতে সিলেট আইনজীবী সমিতির নৈশভোজে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা চট্টগ্রাম ও সিলেটে হাই কোর্টের বেঞ্চ স্থাপন হবে বলে জানান।

ওই অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, “এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমারও আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু কিছু বিচারপতির পদ শূন‌্য আছে। বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

“এটা শেষ হলেই সিলেট ও চট্টগ্রামে হাই কোর্ট বেঞ্চ স্থাপনে প্রক্রিয়া শুরু হবে। এর মাধ্যমে আইনসেবা প্রত্যাশী মানুষেরা উপকৃত হবেন।”

এর একদিন পর ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বাস্তবায়ন পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রধান বিচারপতির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে আগামী জানুয়ারিতেই চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক ও সাবেক জেলা পিপি আবুল হাশেম বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধান বিচারপতিকে অশেষ ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। উনাদের দুজনেরই তীব্র সদিচ্ছা আছে।

“২৭ বছর ধরে আমরা আন্দোলন করে চলেছি। প্রধান বিচারপতি গত বছরও চট্টগ্রাম সফরে তার ইচ্ছার কথা বলেছিলেন। সাংবিধানিক বা অন্য কোনো বাধা নেই, বাধা শুধু ঢাকার স্বার্থান্বেষী আইনজীবীরা।”

বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী কাশেম কামাল ও সদস্য সচিব শঙ্কর প্রসাদ দে।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ বীরু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চট্টগ্রামের আইনজীবীদের প্রাণের দাবি সার্কিট বেঞ্চ। এটা বাস্তবায়নের আশ্বাস পাওয়ায় আমরা খুশি। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছে।”

১৯৮২ সালের ১১ মে চট্টগ্রামে হাই কোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। এইচ এম এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৬ সালের ১৭ জুন সামরিক ফরমানের ৪ (এ) ধারা সংশোধন করে স্থায়ী বেঞ্চকে সার্কিট বেঞ্চ (অস্থায়ী) করা হয়।

১৯৮৬ সালে সংবিধান পুনরুজ্জীবনের পর সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১০০ অনুসারে সার্কিট বেঞ্চের বিধান থাকায় চট্টগ্রামসহ দেশের ছয়টি সার্কিট বেঞ্চ বহাল থেকে যায়। এরপর ঢাকার আইনজীবীদের একাংশ সার্কিট বেঞ্চ ফিরিয়ে নেওয়ার আন্দোলন করলে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে, ছয়টি সার্কিট বেঞ্চই আবার স্থায়ী বেঞ্চের মর্যাদা দেওয়া হয়।

১৯৮৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিকেন্দ্রীকরণ সংক্রান্ত অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদটি বাতিলের আদেশ দিলে চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও সিলেটের হাই কোর্ট বেঞ্চগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

এরপর ১৯৮৯ সালেই চট্টগ্রামের সন্তান আইনজীবী মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল।