বৃহস্পতিবার সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামানের সঙ্গে আড়াই ঘণ্টা মামলার বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার বাদী হিসেবে বাবুল আক্তার কথা বলতে এসেছিলেন।”
মিতু হত্যাকাণ্ডের পর নানা আলোচনার মধ্যে বাবুল মামলার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ ছিল চট্টগ্রামের পুলিশ কর্মকর্তাদের, যাদের সঙ্গে কাজ করতেন বাবুল।
এর মধ্যে বাবুলের চাকরি ছাড়ার কথা জানায় পুলিশ। এরপর সম্প্রতি তিনি ঢাকায় একটি হাসপাতালের সহযোগী পরিচালকের চাকরি নেন।
কী নিয়ে কথা হয়েছে- জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ‘মামলার বিভিন্ন বিষয়ে’ জানিয়ে এর বেশি আর কিছু বলতে চাননি।
বাবুল আক্তারের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
নাম প্রকাশে গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবুল আক্তার সিএমপি সদর দপ্তরে এলেও তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ছাড়া অন্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সাথে কথা বলেননি।”
পদোন্নতি পেয়ে এসপি হয়ে বাবুল চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে বদলি হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে গত ৫ জুন সকালে বন্দর নগরীর ও আর নিজাম রোডে সন্তানের সামনে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় মিতুকে।
পদোন্নতির আগ পর্যন্ত বাবুল নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন।
স্ত্রী হত্যার পর বাবুল বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এরপর দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান।
হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ জঙ্গি সংশ্লিষ্টতাকে প্রাধান্য দিলেও কয়েক দিন পর তা মোড় নেয় অন্যদিকে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এটা জঙ্গিকাণ্ড বলে তারা মনে করছেন না।
এর মধ্যে গত ২৪ জুন রাতে বাবুল আক্তারকে বনশ্রীর শ্বশুরবাড়ি থেকে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর নানা গুঞ্জন ছড়ায়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ ইতোমধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে। দুজন পুলিশের সঙ্গে ‘কথিত বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতও হয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম ও আনোয়ার হোসেন নামে দুজন নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গত ২৬ জুন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসার নাম বলেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ হত্যাসহ প্রায় ছয় মামলার আসামি মুছা ছিলেন চট্টগ্রামে বাবুল আক্তারের সোর্স। পাশাপাশি অস্ত্রের জোগানদাতা হিসেবে গ্রেপ্তার এহতাশেমুল হক ভোলাও বাবুলের সোর্স বলে পরিচিত।
জিজ্ঞাসাবাদের পর বাবুল আক্তার চাকরিচ্যুত হয়েছেন বলে গুঞ্জনের মধ্যে ৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাবুল স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র দিয়েছেন।
তবে বাবুল বরাবরই সব বিষয়ে নীরব থাকছেন।