এসপিপত্নীর সন্দেহভাজন খুনিরা ছাত্রলীগ নেতা হত্যারও আসামি

এসপিপত্নী বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুর সন্দেহভাজন খুনিদের চারজন রাঙ্গুনিয়ার এক ছাত্রলীগ নেতা হত্যাকাণ্ডেরও আসামি।

উত্তম সেন গুপ্ত চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2016, 06:10 PM
Updated : 1 July 2016, 07:18 AM

রাঙ্গুনিয়ায় ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ চৌধুরী হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে মোতালেব মিয়া ওয়াসিম ইতোমধ্যে মিতু হত্যামামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।

নবী, রাশেদ ও কালু নামে অন্য তিনজনের দেশ ছাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বুধবার জানিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার।

২০১২ সালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক রাশেদ চৌধুরীকে (২৮) হত্যা করা হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বাবুলের স্ত্রী মিতুকে গত ৫ জুন নগরীর জিইসি মোড়ের কাছে সড়কে কুপিয়ে ও গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর গত ২৬ জুন ওয়াসিমসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার বলেন, এরাসহ সাত-আটজন মিতুর খুনে সরাসরি জড়িত ছিলেন।  

এরপর বুধবার পাঁচজনের দেশত্যাগ ঠেকাতে বন্দরগুলোকে সতর্ক করার কথা পুলিশ কমিশনার জানান। তার মধ্যে তিনজন ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ হত্যার আসামি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নবীর পুরা নাম মো. নুরুন্নবী। তিনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সোনারগাঁও নতুন পাড়ার বাসিন্দা মুন্সী মিয়ার ছেলে।

রাশেদ ইসলামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সোনামিয়ার ছেলে এবং মো. কালু ঘাগড়াকুল ইউনিয়নের কবির আহমেদের ছেলে।

ওয়াসিম ও রাশেদ ২০১৩ সালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় একে-৪৭ রাইফেলসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলে বলে পুলিশ জানায়।

চট্টগ্রামে জঙ্গি দমন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া বাবুল ঢাকায় বদলি হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে তার স্ত্রী খুন হওয়ার পর উগ্রপন্থিদের দিকেই ছিল পুলিশের সন্দেহ। কিন্তু পুলিশ এখন বলছে, হামলাকারীরা পেশাদার অপরাধী।  

সন্দেহভাজন যাদের দেশ ছাড়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা হত্যা, ডাকাতির  অন্তত আটটি মামলার আসামি। মুছা রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মধ্যম ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলম শিকদারের ছেলে।

গ্রেপ্তার মোতালেব মিয়া ওয়াসিম (ডানে)

গ্রেপ্তার আনোয়ার ও ওয়াসিমের জবানবন্দিতে মিতু হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে মুছার নাম এসেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মুছার বিরুদ্ধে ২০০১ সালে রাঙ্গুনিয়ায় সরকারি বন কর্মচারিদের ওপর হামলা করে গাছ ছিনতাইয়ের দুটি মামলা রয়েছে। একই থানায় ২০০৩ সালে তার বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি, একটি অস্ত্র ও একটি হত্যা মামলা হয়। ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে ইমারত বিধিমালা আইনেও একটি মামলা হয়। 

মুছাসহ যাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তাদের কয়েকজন পুলিশের হাতে বলে তাদের স্বজনরা সন্দেহ করছেন। তবে সিএমপি কমিশনার তাদের গ্রেপ্তারের খবর অস্বীকার করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের ধরতে অভিযান চলছে।

আদালতে ওয়াসিম ও আনোয়ারের জবানবন্দিতে মো. শাহজাহান নামে আরেকজনের নামও এসেছে। তিনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ঘাগড়া কুল রানীর হাটের বাসিন্দা কবির আহমদের ছেলে।

তার দেশ ছাড়াও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পুলিশ।