চিনির কেজিতে ১২ টাকা লাভ করায় ২০ লাখ টাকা জরিমানা

মিল থেকে ৪৬ টাকা কেজিতে কেনা চিনি পাইকারিতে ৫৮ টাকায় বিক্রি করায় চট্টগ্রাম নগরীর খাতুনঞ্জের হাজী মীর আহমদ ট্রেডার্সকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2016, 02:38 PM
Updated : 9 June 2016, 06:44 PM

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অনুসন্ধানে জানা গেছে, এস আলম সুগার মিল থেকে প্রতিদিন কেনা দুই হাজার মেট্রিক টন চিনি প্রতি কেজি ১২ টাকা লাভে বিক্রি করে আসছিল দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জের মীর গ্রুপের প্রতিষ্ঠান হাজী মীর আহমদ ট্রেডার্স। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছিল।

আদালতের নেতৃত্ব দেওয়া চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এস আলম সুগার মিলে উৎপাদিত চিনি পাইকারিতে পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করেন ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আবদুস সালাম।

“উৎপাদিত চিনির ৮০ ভাগ কেনেন তিনি। বাকি ২০ ভাগ তার লোক দিয়ে কিনিয়ে নেন।”

রোজায় চিনির বাড়তি দাম নেওয়ায় বুধবার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এলাকার মীর আহমদ সওদাগর আড়ৎ থেকে তিনজনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: সুমন বাবু

তাহমিলুর বলেন, “প্রতিষ্ঠানটির চিনি কেনার কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি, ১ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত এস আলম গ্রুপের সুগার মিলে প্রতিদিন দুই হাজার মেট্রিক টন করে অর্ডার করা হয়েছে। সে মোতাবেক পেমেন্টও করা হয়েছে।”

অভিযানে আটক তিনজনকে জরিমানার পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

অভিযানে প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অসহযোগিতামূলক আচরণের পাশাপাশি দুর্ব্যবহারের শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন র‌্যাব-৭ এর স্কোয়াড কমান্ডার জালাল উদ্দিনও।

তিনি বলেন, “আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য গেলেও কোনো কথা বলতে চাননি তারা। উপরন্তু সাধারণ শ্রমিকদের আমাদের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়েছিল।”

“সাধারণ শ্রমিকদের দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধ মিছিল করানোর চেষ্টা হয়েছে। তাদের বুঝিয়ে বললে তারা সরে যায়।”

অভিযানে হাজী মীর আহমদ ট্রেডার্সের কার্যালয়টি বন্ধ করে দেওয়া হয় জানিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর বলেন, প্রতি কেজিতে এক বা দুই টাকা লাভ করবেন বলে মুচলেকাও দিয়েছেন প্রতিষ্ঠান মালিক।

রোজায় চিনির বাড়তি দাম নেওয়ায় বুধবার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এলাকার মীর আহমদ সওদাগর আড়ৎ থেকে তিনজনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: সুমন বাবু

তবে ৪৬ টাকা দরে চিনি কেনার কথা অস্বীকার করে মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুস সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৪৬ টাকার কথা বলা হলেও আসলে এস আলম সুগার মিল থেকে আমাদের চিনি দেওয়া হয় প্রতি কেজি ৫০ টাকায়।

“তার সঙ্গে লেবার চার্জ, ক্যারিং চার্জসহ প্রতি কেজিতে চার টাকা করে খরচ পড়ে। প্রতি কেজি চার টাকা লাভে বিক্রি করলে ৫৮ টাকায় বিক্রি করতে হয়।”

তাহলে জরিমানা করা হল কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।”

জানা গেছে, হাজী মীর আহমদ ট্রেডার্স থেকে পাইকারিতে চিনি কেনে চারটি প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হল- এম হোসেন ট্রেডার্স, এম জি ট্রেডিং, এম হোসেন ব্রাদার্স ও বিসমিল্লাহ গ্রুপ।

অভিযানে অতিরিক্ত দামে ছোলা বিক্রি করায় বাজারের মাসুদ ব্রাদার্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর।