বাবুলের স্ত্রীর খুনিরা ধরা পড়বে শিগগিরই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের ‘সফলতা’ ব্যাহত করতেই চট্টগ্রামে এসপির স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে মন্তব্য করে খুনিদের ‘শিগগিরই’ গ্রেপ্তারের আশা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2016, 03:18 PM
Updated : 5 June 2016, 03:25 PM

রোববার দুপুরে নগরীর ও আর নিজাম রোডে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের বাসায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “টার্গেট কিলিং উদঘাটনে সফলতা অনেক। সেই সফলতাকে বিভ্রান্ত করতে এধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।

“আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, যে উদ্দেশ্য নিয়ে যেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটাক, আমরা খুব শিগগির তাদের ধরতে সক্ষম হব।”

এদিক সকালে ও আর নিজাম রোডে বাড়ির কাছে সন্তানের সামনে কুপিয়ে ও গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় মাহমুদা আক্তার মিতুকে।

তার স্বামী বাবুলের চট্টগ্রামের অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে জঙ্গি দমনের কাজ প্রশংসা পেয়েছে। সম্প্রতি ঢাকায় বদলি হলেও স্ত্রী ও দুই সন্তান চট্টগ্রামেই ছিলেন।

বাবুলের স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিরা জড়িত বলে সন্দেহ করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, সাম্প্রতিক অন্য হত্যাকাণ্ডগুলোর ধরনের সঙ্গে মিতুর খুনের মিল রয়েছে।

সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বান্দরবানে বিজিবির এক অনুষ্ঠানেও জঙ্গিদের সন্দেহের কথা বলেন। ওই অনুষ্ঠান শেষে চট্টগ্রামে এসে স্ত্রী হারানো পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে যান তিনি।

আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “এ পর্যন্ত ৩৭টি টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে ৩১টি ঘটনায় আমরা ১৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। এসব ঘটনায় ৪৯ জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।”

পুলিশের স্ত্রীর উপর হামলার ঘটনা এটা প্রথম হলেও তাতে বাহিনীর সদস্যদের মনোবলে চিড় ধরবে না বলে মনে করেন ভারপ্রাপ্ত আইজিপি জাভেদ পাটোয়ারী।

বাবুলের বাড়িতে পুলিশ প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, “২০১৩ সালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশের ১৭ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন, প্রায় আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৩০০ জন পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।

“পুলিশের মনোবল এত ঠুনকো নয়। পেশাগত দায়িত্ব পালনে যে ঝুঁকি, তা মেনে নিয়েই আমরা কাজ করি।”

এই হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য সব কারণ মাথায় রেখে পুলিশের সকল সংস্থা একযোগে কাজ করছে বলে জানান পুলিশ প্রধান।

“এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত যাতে হয় সে জন্য পুলিশ, সিআইডি, ডিবি, পিআইবি ও কাউন্টার-টেরোরিজম ইউনিট, র‌্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাসহ সকলের সহযোগিতায় আমরা ঘটনা উদঘাটন করব।’’

এদিকে রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে মিতুর লাশের ময়নাতদন্ত শেষ হয়। এরপর নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনস মাঠে জানাজা হয়।

জানাজায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, জেলা পরিষদ প্রশাসক এম এ সালাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহারও অংশ নেন।

এরপর বিকালে লাশ নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হন স্বজনরা। ঢাকা থেকে ঝিনাইদহে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে সোমবার দাফন করা হবে মিতুকে।