শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে লায়ন্স ক্লাবের ১৯তম বার্ষিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকায় সরকার ৩৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও তা ছাড়িয়ে প্রায় ৩৫ বিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত উল্লেখ করে এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্বও তুলে ধরেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
“চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের হার্ট। কারণ চট্টগ্রাম দিয়ে সব আমদানি-রপ্তানি হয়। চট্টগ্রাম বন্দর যদি বাধাগ্রস্ত হয় তাহলে তার প্রভাব ব্যবসা-বাণিজ্যে পড়ে।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন ৭ মার্চের ভাষণে দুটি লক্ষ্যের কথা জানান, তেমনি তার কন্যা শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার রূপকল্প ভিশন-২০২১ লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
“২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে আমরা আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়।”
বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কৌশিক বসুর বাংলাদেশ নিয়ে প্রশংসা করার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কৌশিক বসু বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতির প্রশংসা করে বলেছিলেন, এটা অন্যান্য দেশের জন্য একটা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে।
নিজেকে গ্রামের ছেলে উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, “আমি গ্রামের ছেলে। একটা সময় গ্রামে অধিকাংশ মানুষের পায়ে স্যান্ডেল থাকত না। এখন শতভাগ মানুষের পায়ে স্যান্ডেল আর গায়ে সুন্দর জামা।”
১৯৭২ সালে বাংলাদেশের বাজেট ৭৮৭ কোটি টাকা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “গত বছর আমরা দিয়েছি দুই লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট। আর এবছর সেটা হবে তিন লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা।”
বাংলাদেশ এখন চাল রপ্তানির জন্য নতুন বাজার খুঁজছে বলেও তিনি অনুষ্ঠানে জানান।
“এক সময় আমরা সাড়ে সাত কোটি মানুষের মুখে খাবার দিতে পারতাম না। এখন বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি চাল রপ্তানির নতুন বাজার খুঁজছি।”
২০২১ সালে পোশাক খাত থেকেই ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সাবির্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে অনেক পেছনে ফেলেছে মন্তব্য করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের রপ্তানি হয়েছে গত বছর ৩২ বিলিয়ন ডলার, সেখানে পাকিস্তানের হয়েছে ২৪ বিলিয়ন ডলার। আমাদের রিজার্ভ প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার, পাকিস্তানের সেটা ১৬ বিলিয়ন ডলার।”
তিনি বলেন, রেমিটেন্সে পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে। ভালো অবস্থানে আছে শিশু ও মাতৃ মৃত্যু কমানোর ক্ষেত্রেও।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি কাজী একরামুদ্দিন আহমদ, লায়ন্স ক্লাবের সাবেক আন্তর্জাতিক পরিচালক শেখ কবির হোসেন, মাল্টিপল কাউন্সিল চেয়ারপারসন লায়ন প্রকৌশলী এম এ আউয়াল ও ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর মোস্তাক হোসাইন।