‘সংঘাত এড়াতে’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই ছাত্রাবাসের মধ্যে সীমানা দেয়াল তৈরি করছে প্রশাসন।
Published : 22 Mar 2016, 06:53 PM
৫ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল ও শাহ আমানত ছাত্রাবাসের মধ্যে ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও নয় ফুট উচ্চতার এ দেয়াল নির্মাণ শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল দপ্তর।
দেয়াল থাকলে সংঘর্ষরত দুই পক্ষ ‘মুখোমুখি’ হতে পারবে না আর তা সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।
হল দুটির মধ্যে আগেই দেয়াল ছিল জানিয়ে সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ‘সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে’ সেটি আবার তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তায় দেয়ালটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেয়ালটি তৈরি হলে সংঘর্ষের সময় ছাত্রাবাস দুটির শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি হতে পারবে না- যা সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।”
প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা ব্যয়ে ছাত্রাবাস দুটির মাঝখানের এই সীমানা দেয়াল নির্মাণের কাজ আগামী এপ্রিলের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ কয়েকটি বড় সংঘর্ষ হয়েছে শাহজালাল ও শাহ আমানত এই ছাত্রাবাস দুটিকে কেন্দ্র করেই।
চবি ক্যাম্পাসের উত্তর অংশে মুখোমুখি অবস্থিত শাহজালাল ও শাহ আমানত। ছাত্রাবাস দুটির শিক্ষার্থীরা একে অপরের উপর হামলা করলে সীমানা দেয়াল না থাকায় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
উভয় ছাত্রাবাসে দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা অবস্থান করায় সংঘর্ষের আশঙ্কাও বেশি বলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধারণা। গত বছর খানেক ধরে একাধিক সংঘর্ষ এই ধারণাই প্রমাণ করে।
শাহ আমানত হলের আবাসিক শিক্ষার্থীর আসন সংখ্যা ৬৩২ আর শাহজালাল হলে ৪৭৫ জন।
২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের দুই বগিভিত্তিক সংগঠন ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) ও চ্যুজ ফ্রেন্ডজ উইথ কেয়ার (সিএফসি)।
তখন শাহজালাল হলে অবস্থানরত ভিএক্স ও শাহ আমানত হলের সিএফসি কর্মীদের মধ্যে গোলাগুলির সময় শাহ আমানত হলে থাকা সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী তাপস সরকার গুলিতে নিহত হন।
সংঘর্ষরত দুই পক্ষের কর্মীরা সেদিন ছাত্রাবাস দুটির মধ্যবর্তী ওই খালি জায়গায় অবস্থান জোরদার করতে হামলা-পাল্টা হামলা চালায়।
গত বছরের ২ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোকে কেন্দ্র করে আবারও হল দুটিতে সংঘর্ষে জড়ায় চবি ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের অনুসারীরা।
ওই সংঘর্ষের সময় দুই ছাত্রাবাসের মাঝের খালি জায়গায় অবস্থান নেয় পুলিশ সদস্যরা।
হামলায় সেখানে থাকা হাটহাজারী থানার ওসি মোহাম্মদ ইসমাইল ও আরও দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত আটজন আহত হয়।
সর্বশেষ গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময়ও হল দুটিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয় যাতে আহত হন অন্তত ছয়জন। সংঘর্ষের জেরে স্থগিত করা হয় চবি ছাত্রলীগের দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি।