শনিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর নাব্যতা এবং নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ৩০তম সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
শাজাহান খান বলেন, “দখল ও দূষণ থেকে কর্ণফুলীকে রক্ষায় এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। এটির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া না হলে কর্ণফুলীও বুড়িগঙ্গার ভাগ্য বরণ করতে পারে”।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনে ‘সিএস জরিপ’র ভিত্তিতে কর্ণফুলীর দুই তীরে সীমানা নির্ধারণ করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “প্রয়োজনে আরএস জরিপের সহায়তা নেওয়া হবে”।
কর্ণফুলীর দুই তীরে সরকারি-বেসরকারি আড়াই হাজারের মতো অবৈধ স্থাপনা রয়েছে বলে গত বছরে জেলা প্রশাসনের করা জরিপে উঠে আসে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ১৩৩টি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী নদীতে তরল বর্জ্য নির্গমন করে, এর মধ্যে ১২৩টির ইটিপি রয়েছে। এই কর্ণফুলী নদীতেই অবস্থিত দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দর।
সভায় নৌ-পরিবহনমন্ত্রী চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদার লবণাক্ততা রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি কর্ণফুলী নদী এবং খালগুলোর দখল-দূষণ মোকাবেলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার ওপর জোর দেন।
এছাড়া কাপ্তাই লেকের নৌপথে নাব্যতা রক্ষায় খনন করার কথাও জানান তিনি।
দেশের অভ্যন্তরীণ প্রায় ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথের মধ্যে ২০ হাজার কিলোমিটারের মতো হারিয়ে গিয়েছিল জানিয়ে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, “এর মধ্যে এক হাজার কিলোমিটারের মতো উদ্ধার করা গেছে। বাকিগুলো উদ্ধারে খনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে”।
সভায় কর্ণফুলী দখল ও দূষণ, নদীটির সীমানা চিহ্নিতকরণ, দূষণরোধে অভিযান পরিচালনা ছাড়াও নগরীর অভ্যন্তরে বিভিন্ন খালের বর্তমান পরিস্থিতি এবং করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, “কর্ণফুলী ও হালদাকে বাঁচাতে হবে। চট্টগ্রাম সুন্দর শহর, এ শহরকে ভালো রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের”।
সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক, নদী কমিশনের চেয়ারম্যান আতহারুল ইসলাম, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক মাধব রায়, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রইছ উল আলম, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।